সরকারি সংস্থা হিসেবে সাধারণ মানুষদেরকে ন্যায্য মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য সরবরাহ করে থাকে। তাইতো অনেকেই টিসিবি কার্ড কিভাবে করতে হয় এবং কি কি সুবিধা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে চান। আপনি যদি সরকারি এই সুবিধা গুলো পেতে চান তাহলে অবশ্যই কিছু নিয়মকানুন মানতে হবে। এই কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া এবং খুঁটিনাটি বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন তেল, চিনি, ডাল, পেঁয়াজ, চাল ইত্যাদি ন্যায্য মূলে অর্থাৎ কম দামে ক্রয় করতে পারবেন। দেশের সাধারণ নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের জন্য সাধারণত এই কার্ড প্রদান করা হয়।
টিসিবি কার্ড পেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
১। প্রথমে লাগবে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড।
২। তারপর প্রয়োজন হবে আপনারই বাৎসরিক কত টাকা আয় করেন। কারণ যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল তাদেরকে এই কার্ড প্রদান করা হয় না।
৩। আপনার পরিবারে কতজন সদস্য রয়েছে তারও একটি হিসাব প্রয়োজন হবে। কারণ এর ওপর ভিত্তি করেই আপনার জন্য রেশন বরাদ্দ করা হবে। যারা কিনা মা-বাবা, ভাই-বোন সবাই মিলে একসাথে থাকে তাদের জন্য টিসিবি কার্ড পাওয়া সম্ভাবনা বেশি।
৪। আপনি যে এলাকার কার্ড করতে চান অবশ্যই সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা হতে হবে। তাই নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য বিদ্যুৎ বিলের কাগজ অথবা অন্য যেকোনো তথ্য প্রয়োজন হতে পারে।
টিসিবির কার্ড কিভাবে পাবেন
প্রথম ধাপ
আপনাকে একটি আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এর জন্য আপনি স্থানীয় পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন অথবা ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে যেতে পারবেন।
দ্বিতীয় ধাপ
ফরম সংগ্রহের পর নাম, ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য গুলো দিয়ে সেটি পূরণ করতে হবে। সেই সাথে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর পরিবারের সদস্য সংখ্যাও স্পষ্টভাবে শুদ্ধ বানানে লিখতে হবে।
তৃতীয় ধাপ
এভাবে আপনাকে কিছু কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে। যেগুলোর কথা আমি উপরে একবার উল্লেখ করেছি। ফটোকপি জমা প্রদান করলেই হবে। তবে যখন অ্যাপ্লিকেশন সাবমিট করবেন তখন মূল কপি গুলো দেখতে চাইতে পারে।
চতুর্থ ধাপ
এই ধাপে আপনাকে নির্ধারিত অফিসে গিয়ে আবেদন পত্র এবং অন্যান্য কাগজ গুলো জমা প্রদান করতে হবে। আপনি স্থানীয় প্রশাসন অফিসে এই কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।
সর্বশেষ ধাপ
আপনার সমস্ত কাগজপত্র এবং তথ্য গুলো যাচাই-বাছাই শেষে কর্তৃপক্ষ এটির অনুমোদন প্রদান করবে। অনুমোদিত হয়ে গেলে নির্দিষ্ট তারিখে গিয়ে আপনি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
টিসিবি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন
তথ্য প্রযুক্তির এই উন্নতির যুগে সরকারি প্রায় সব ধরনের সেবায় অনলাইনে প্রদান করা হয়ে থাকে। আপনি নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়েও এই আবেদনটি করতে পারবেন।
তবে এর জন্য আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং অন্যান্য কাগজপত্র গুলির স্ক্যান কপি প্রয়োজন হবে। সেই সাথে আবেদনকারী মোবাইল নম্বরে অন্যান্য তথ্য গুলি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
টিসিবি কার্ডের সুবিধা কি কি
একবার কার্ড হাতে পেয়ে গেলে আপনি এটি দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য গুলো কম দামে ক্রয় করতে পারবেন। তবে কোনোভাবেই এটির অপব্যবহার করা যাবে না কিংবা ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না।
প্রতিবার টিসিবি পণ্য কেনার পর নিয়মিতভাবে তারা এটি দেখতে চাইবে। প্রতি বছর বছর এটি রিনিউ করতে হবে। রিনিউ করার সময় নতুন করে কাগজপত্র জমা দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে।
আপনি যদি সময় মত এটাকে নবায়ন না করেন তাহলে সমস্যার সম্মুখীনও হতে পারেন। আর নবায়ন করাও খুব কঠিন কাজ নয়।
দেশের প্রেক্ষাপটে দিন দিন বেড়ে চলেছে বিভিন্ন ধরনের পন্যের দাম। দরিদ্র মানুষদের জন্য বাজার করা যেন দিন দিন অসাধ্য হয়ে পড়ছে। তাইতো তাদেরকে সহযোগিতার লক্ষ্যে সরকার টিসিবি কার্ড প্রদান করে থাকে। আপনিও যদি আর্থিক অসচ্ছলতা কিংবা দারিদ্রতার মধ্যে জীবন যাপন করে থাকেন তাহলে কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।