আমাদের আশেপাশে অনেক লোক আছে যারা একাকীত্বে ভুগছেন। এদেরকে সব সময় একা থাকতে দেখা যায়। এমনকি আপনি যখন পার্কে কিংবা কোথাও ঘুরতে যাবেন দেখবেন কিছু মানুষ একা একাই হাঁটছে। আবার অনেকেই আছেন আশেপাশের সবাই থাকা সত্ত্বেও নিজেকে আলাদা করে রাখছেন।
এধরনের মানুষেরা প্রিয়জন, আশেপাশের বন্ধু-বান্ধব সবাইকে বাদ দিয়ে সব সময় মোবাইলের স্ক্রিনে ঢুকে থাকেন। বাসায় থাকলে পরিবারে লোকজনদের সাথে কথা না বলে সারাক্ষণ টিভি দেখে। এই অভ্যাসের ফলে আমরা একজন আরেকজনের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। জীবনে আরও একা হয়ে উঠছি।
আগে এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষের হাতে এই ধরনের কোন ডিভাইস ছিল না। দূরের কারো সাথে যোগাযোগ করার সম্ভব ছিল না কিংবা বিনোদনের এত উৎস ছিল না। তখন মানুষ খানিকটা সময় কাটানোর জন্য একজন আরেকজনের কাছে যেত। এতে করে দুজনের মধ্যে যেভাবে যেরকম ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠতো ঠিক তেমনি ভাবে সামাজিক বন্ধনও অটুট থাকতো।
একাকীত্ব নিয়ে সচেতন থাকুন
কিন্তু বর্তমান সমাজ সোস্যাল মিডিয়ার যুগে আমরা সারা বিশ্বব্যাপী মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারি ঠিকই কিন্তু আশেপাশের মানুষ গুলোর সাথে আমাদের সম্পর্ক নেই। একারণে মানুষ অপরজনের সাথে কম জানতে পারছে। তাদের সমস্যা গুলি এড়েয়ে চলছে। এতে করে সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। ভার্চুয়াল জগতে সবসময় থাকার কারণে আমাদের চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখছি না।
যার কারণে জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে সবচাইতে একা বোধ করি। মনে হয় আমাদের আশেপাশে কেউ নেই। আস্তে আস্তে হতাশা এবং বিষন্নতার দিকে চলে যায় মানুষ। বেড়ে যায় একাকিত্বের পরিমাণ।
আমেরিকা ভিত্তিক একটি গবেষণা দেখা গিয়েছে আপনি যদি সপ্তাহে বেশ কয়েকবার অন্তত ১০ মিনিট করে কারো সাথে নিজের মনের কথা,গুলো শেয়ার করেন তাহলে আপনার একাকীত্ব গুলো দূর হয়ে যাবে। তাই প্রিয় ফোনটিকে কিছুক্ষণের জন্য দূরে রেখ পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সাথে সময় দিন। এতে করে দেখবেন যে কোন পরিস্থিতিতেই নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে না।
চাকুরীজীব মানুষের ক্ষেত্রে
যে সকল বাবা-মা বাসায় সন্তান রেখে চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাদের ছেলেমেয়ে অনেকটাই একা অনুভব করে। আবার যে সকল বৃদ্ধ পিতা-মাতা কে বাসায় রেখে সন্তানেরা চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তারাও একাকিত্বে ভুগতে থাকেন।
কোন ব্যস্ততার কারণে হয়তো সারাদিন সময় দেওয়া হয় না কিন্তু মোবাইল ফোনে সবসময় খবর রাখা, বাসায় যতটুকু সম্ভব সময় দেওয়া, মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে এই দুঃখ এবং একা অনুভুতি দূর করা যায়।
সময় কাটানোর জন্য বিকল্প পদ্ধতি বেছে নিন
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে মানুষের রঙিন জীবন দেখে নিজেকে অনেক বেশি শূন্য মনে হয়। মনে হয় আমার জীবনে কিছুই নেই। কিন্তু সব আছে আপনার জীবনে। এগুলো ভার্চুয়াল জগতের একটি প্রভাব বলতে পারেন।
তাই সময় কাটানোর জন্য বই পড়া আড্ডা দেওয়া কোথায় ঘুরতে যাওয়া এটা দিয়ে পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করুন। এমনকি অবসর সময়ে বাসার জিনিসপত্র গুছানোর কাজ করলেও অনেকটাই মন ভালো হয়ে যায়।
সমাজের মধ্যে বাস করেও একাকিত্বে ভোগার মতো খারাপ পরিস্থিতি আর নেই। তাই আজ থেকে জীবনের কিছু কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করুন এবং সবাইকে নিয়ে হাসিখুশি জীবন যাপন করুন।