জেনে নিন পুলসিরাত পার হতে কত সময় লাগবে

মানুষের পৃথিবীতে আগমন হয়েছে জান্নাত থেকে। প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট সময় পর মৃত্যুর মাধ্যমে যাত্রা করতে হবে অনন্ত কালের উদ্দেশ্যে। কবর থেকে কেয়ামত, হাশর সকল বিচার নিকাশ শেষে নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে হবে পুলসিরাত পার হয়ে।

পুলসিরাত শব্দটির অর্থ হচ্ছে সেতু, রাস্তা কিংবা পুল। বাংলায় বললে রাস্তা কিংবা পথ। মৃত্যু এবং কেয়ামতের পর সকল সময়ের সকল মানুষকে হাশরের ময়দানে একত্রিত করা হবে। মানুষের জীবনের সকল কাজকর্মের জন্য বিচারের মুখোমুখি করা হবে। বিচার সম্পন্ন হলে পুলসিরাত পার হয়ে যেতে হবে জান্নাতের দিকে। যারা এটি পার হতে ব্যর্থ হবে, তারা পড়ে যাবে জাহান্নামের অতল গহব্বরে।

তবে পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের সরাসরি এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। শুধুমাত্র সিরাত শব্দটি ব্যবহার করেই বোঝানো হয়েছে। যে সকল ধর্মভীরু মুসলমান ব্যক্তি ইহকালে মহান আল্লাহ তা’আলার আদেশ, নিষেধ এবং নবী-রাসূলের মাধ্যমে নির্দেশিত জীবন মেনে চলেছেন তারা এটি পার হতে পারবেন। আর যারা অবিশ্বাসী ছিলেন, দুনিয়ার পাপ কাজে লিপ্ত ছিলেন তারা এটি পার হতে পারবে না বরং হয়ে যাবে জাহান্নামে। এব্যাপারে সূরা মারিয়াম এর ৭১ থেকে ৭২ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে।

পুলসিরাত পার হতে কত সময় লাগবে?

বুখারী শরীফের ৭৪৩৯ নম্বর হাদিসের বর্ণনা করা আছে যে, একবার সাহাবীরা রাসূল (সা.) কে পুলসিরাতের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে তিনি বললেন, এটি পিচ্ছিল এবং লোহার হুক বসানো, বাঁকা করা, কাটা যুক্ত একটি পথ। মুমিন বান্দারা এটার উপরে বিদ্যুতের গতিতে, কেউ দ্রুতগামী ঘোড়ার গতিতে, কেউ বাতাসের গতিতে কিংবা কেউ চোখের পলকে পথটি পার হতে পারবে। আবার কেউ কেউ অনেক কষ্ট করার পর এটা পার হতে পারবে।

এমনকি কোন কোন ব্যক্তি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে টেনে হিঁচড়ে কোনরকমে পুলসিরাত পার হতে পারবে।

এছাড়াও বিভিন্ন হাদিসে পুলসিরাতের সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। তবে উক্ত হাদিস গুলোর মূল বক্তব্য হচ্ছে এই সিরাত অথবা রাস্তাটি হবে মানুষের মাথার চুলের চাইতে অনেক চিকন। সেটি হবে তরবারির চাইতেও অনেক বেশি ধারালো। এমনকি অত্যন্ত পিচ্ছিল হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা যাকে চান, তিনি ছাড়া কারো পায়ের পক্ষে সেখানে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। সে পতিত হয়ে যাবে অন্ধকারে। প্রতিটি মানুষকে তার ঈমানের উপর নির্ভর করে আলো প্রদান করা হবে এবং এর উপর নির্ভর করে তারা এটির করতে পার হতে পারবে। যাদের ঈমান এবং নেক অর্জন যত বেশি তারা তত দ্রুত গতিতে পুলসিরাত পার হতে পারবে। আর যাদের খারাপ আমল রয়েছে পাশাপাশি কিছু অনেক অর্জন হচ্ছিল তারা কোনো রকমে সেটি দিয়ে অপর প্রান্তে পৌঁছাতে পারবে।

সেজন্য এই বলা হয়েছে কেউ বিজলীর গতিতে মুহূর্তই পুলসিরাত পার হতে পারবে আবার কেউ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোন রকমে আগুনে পুড়ে পারে যেতে পারবে।

Leave a Comment