প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটির পর্যন্ত কিছু শিক্ষার্থীদের ভয়ের একটি সাবজেক্ট হচ্ছে গণিত। তাইতো সেই ভয় দূর করে গণিতে ভালো করার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। ছাত্র জীবনে যারা এই বিষয়ে ভালো তুলতে পারছেন না কিংবা ভালোভাবে বিষয়টি আয়ত্ত করতে পারছে না তাদেরকে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ হচ্ছে চাকুরীর পরীক্ষার সহ জীবনের নানার ধাপেই গণিত তথা হিসাবের অনেক ব্যবহার রয়েছে।
আপনার বয়স যাই হোক না কেন এই বিষয়টিকে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের হিসাব করতে আমাদের গণিতের সাহায্য প্রয়োজন। কয়েকটি ছোট ছোট উপায় অবলম্বন এবং পদ্ধতি জেনে নিয়ে গণিত ও হিসাবের সকল বাধা দূর করে নিন।
গণিত কাকে বলে
এই শব্দটির মূল উৎস হচ্ছে পাটিগণিত। যদিও গণিত কাকে বলে এ সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই তবে অনেকেই এটিকে নানাভাবে আখ্যায়িত করেছেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় বিখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছেন পরিমাপের বিজ্ঞানী হলো গণিত। তাই বিজ্ঞানের একটি অংশ যেটাকে মূলত গণনার কাজে লাগানো হয় সেটিকে গণিত বলা যায়।
আবার গণিত কে আবিষ্কার করেছেন সেটি নির্ধারণিত করে বলা মুশকিল। এর কারণ হচ্ছে বীজগণিত, পাটি গণিত, জ্যামিতি, ক্যালকুলাস ইত্যাদি বিষয় গুলো একেক বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আরেকদিন আলোচনা করব।
গণিতে ভালো করার উপায় কি কি
সর্বপ্রথম প্রয়োজন হচ্ছে মনোযোগ। হিসাব এবং সংখ্যা গুলোর প্রতি যত বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন গণিত আপনার কাছে তত বেশি সহজ মনে হবে। বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা দেখলে যদি সেগুলো মাথায় না ধরে তাহলে অন্য কোন কিছুতে চেষ্টা করুন।
এর জন্য সহায়তা নিতে পারেন বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধিমূলক গেমের। যার মধ্যে রয়েছে ড্রাগন বক্স গেইম যেটি বীজগণিত সম্পর্কিত একটি খেলা। এটির মাধ্যমে আপনি বীজগণিতের বাধা গুলো দূর করতে পারেন। বইয়ে যদি এই ড্রাগণ বক্স খেলার সম্পর্কিত কোন তথ্য না পান তাহলে ইউটিউবে এর অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন।
প্রতিদিন গণিত প্র্যাকটিস করুন
ছোটবেলায় স্কুলে শিক্ষকরা আমাদেরকে সবসময় বলতেন গণিত বেশি বেশি অনুসরণ করার জন্য। ধরে নেয়া যাক আপনি হিসাব কিংবা অংক ঠিক ভালোভাবে বুঝেননি। যখন ওই অংকটি বাসায় বারবার করতে থাকবেন তখন দেখবেন ঠিকই মাথায় ঢুকে গিয়েছে।
অংক করার সময় চিন্তা করার বিষয়টিও মাথায় রাখবেন। একটি প্রশ্নের কি কি তথ্য দেওয়া আছে এবং কি কি তথ্য যা হয়েছে সেগুলো নিয়ে চিন্তা করতে থাকুন। যত বেশি চিন্তা করতে থাকবেন অঙ্কও ততো বেশি সহজ মনে হবে।
বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধির অংক করা
ব্যাংক, বিসিএস সহ নানা চাকরির পরীক্ষায় বুদ্ধি বৃত্তিক অংক গুলি এসে থাকে। এই অংকের ফলাফল গুলো বের করার জন্য হিসাবের চাইতে বুদ্ধির ব্যবহারই বেশি প্রয়োজন হয়। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সসহ নানা ধরনের বইয়ে এই অংক গুলি করার চেষ্টা করুন। ইন্টারনেট ঘেঁটে ও বুদ্ধি বৃত্তিক অংক গুলো সমাধান করতে পারবেন। সেই সাথে ছোট ছোট হিসাব গুলি করার জন্য যথাসম্ভব ক্যালকুলেটরের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
শর্টকাট নিয়ম গুলি এড়িয়ে চলুন
বর্তমানে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার এবং ইউটিউব ভিডিওতে গণিতের শর্টকাট শেখানো হয়। দীর্ঘ মেয়াদে ভালোভাবে অংক বোঝার জন্য এই শর্টকাট গুলি বাধা স্বরুপ। এটা শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা কিনা ইতিমধ্যে অংক ভালো করেন। শুধুমাত্র দ্রুত ফলাফল বের করার জন্য সরকার পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করা হয়। তাই গণিতে ভালো করার উপায় হিসেবে শর্টকাট পদ্ধতি গুলো এড়িয়ে চলুন।
গণিতসহ নানা বিষয়ে ভালো করার জন্য কিছু টিপস
যেকোনো সাবজেক্টে ভালো রেজাল্ট এবং ধারণা লাভ করার জন্য বারবার অনুশীলনের বিকল্প কোন কিছু নাই। আপনাকে প্রতিদিনই একই অংক বারবার করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ সূত্র এবং মূল বিষয়বস্তু আলাদা একটি খাতায় নোট করার চেষ্টা করুন। বিষয়টি এরকম না যে সেই নোট দেখে পরবর্তীতে আবার পড়বেন কিংবা কাজে লাগবে। আপনি সবসময় বই দেখেই পড়বেন কিন্তু আলাদাভাবে নোট করার অভ্যাস করে তোলে গুরুত্বপূর্ণ টপিকস মাথায় ভালোভাবে মনে থাকে।
বীজগণিত, পাটিগণিত, ক্যালকুলাস ইত্যাদি অংক কলার জন্য সূত্রগুলো ভালোভাবে মুখস্ত করা উচিত। যদি সূত্র ঠিকভাবে মাথায় না থাকে তাহলে কখনোই গণিতে ভালো নম্বর তুলতে পারবে না কিংবা অংক সমাধান করতে পারবেন না। আবার প্রতিটি অংক অপর একটি অংক থেকে কিছুটা ভিন্ন উপায়ে হয়ে থাকে। তাই কাছাকাছি অংক গুলোর মধ্যে কি কি পার্থক্য রয়েছে তা আলাদাভাবে নোট করার চেষ্টা করুন।
সর্বোপরি গণিতে ভালো করার উপায় হচ্ছে কঠোর পরিশ্রম ধৈর্য এবং মনোযোগ।