ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেকেই চেষ্টা করেন গভর্নমেন্ট বা সরকারি জব গুলোতে প্রবেশ করার জন্য। আবার অনেকেই বাংলাদেশের সেরা বেসরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। এই দুই সেক্টরে মধ্য বেশ পার্থক্য রয়েছে। বেতন, পোস্টিং, কর্মপরিবেশ, কাজের ধরন ইত্যাদি বিবেচনায় এক একজনের কাছে একেকটি পছন্দ।
আপনি যদি প্রাইভেট চাকরিতে যোগদান করার জন্য মনোনিবেশ করে থাকেন তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকে বাংলাদেশের সেরা প্রাইভেট চাকরি গুলো সম্পর্কে আমি আলোচনা করতে যাচ্ছি। তাই পুরো লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়ে আপনার জন্য সেরা পেশাটি বেছে নিন।
বাংলাদেশের সেরা বেসরকারি চাকরি
ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান
ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান, এনজিও প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির ক্ষেত্রে বর্তমানে তুরুণ তরুণীরা ব্যাপকভাবে যোগদান করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আকর্ষণীয় বেতনের পাশাপাশি সরকারি চাকরির মত আর সপ্তাহের ২ দিন ছুটি পাওয়া যায়।
শিক্ষাগত যোগ্যতা দক্ষতা এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে প্রমোশন পেয়ে ভবিষ্যতে অনেক বড় পেতে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান গুলোতে চাকরিতে যোগদান করার জন্য অনার্স বা মাস্টার্স ডিগ্রী প্রয়োজন হয়। একইভাবে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার, একাউন্টস, এডমিন, এইচআর ইত্যাদি পোস্টে চাকরি পেতে গেলে অবশ্যই অনার্স বা মাস্টার্স পাশ হতে হবে। ডিগ্রী বা সমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও আপনি এ সকল চাকরি পেতে পারেন।
যারা একদমই নতুন যোগদান করেন তারা প্রতিষ্ঠান ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলোতে যোগদান করে প্রবেশনারি পিরিয়ড শেষ করে মোটামুটি ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যায়।
আবার যারা অনেক অভিজ্ঞ মোটামুটি ৭ থেকে ৮ বছর ধরে চাকরি করছেন এবং ম্যানেজার পদে প্রমোশন পেয়েছেন তারা ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। এমনকি ১৫ থেকে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ব্যক্তিরা কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পান।
আইটি সেক্টরে চাকরি
সেরা বেসরকারি চাকরির তালিকায় তথ্য প্রযুক্তি সেক্টর অনেকে এগিয়ে। ওয়েব ডেভেলপার, সফটওয়্যার ডেভলপার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডিজিটাল মার্কেটার ইত্যাদি প্রাইভেট চাকরি গুলো বর্তমানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
আবার অনেকেই এই ধরনের কাজ গুলো শিখে বাংলাদেশে বসে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় কোম্পানিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাকরি করছে। মোটামুটি ফ্রেশার একজন ডেভলপার ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন।
সময়ের সাথে সাথে যত বেশি অভিজ্ঞতা হয় তার বেতনও ততো বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এইচআর এবং এডমিন সেকশনের চাকরি
এটি আধুনিক যুগের জনপ্রিয় একটি পেশা। গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সকল ধরনের ইনস্টিটিউটেই এইচআর এবং এডমিন ডিপার্টমেন্ট থাকে। যারা পাবলিক এডমিন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন তাদের জন্য এটি সবচাইতে উপযোগী।
শুরুতে একজন এইচআর অথবা এডমিন অফিসারের সেলারি মোটামুটি ২০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং বেশ কিছু বছর অভিজ্ঞতা অর্জনের উপর ম্যানেজার, জিএম পদে প্রমোশন পাওয়া যায়। তখন প্রতিমাসে বেতন পাওয়া যায় ১ লাখ টাকা থেকে ২/৩ লাখ টাকা পর্যন্ত।
স্বাস্থ্যসেবা ও ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর
নার্স, প্যাথলজি ডিপার্টমেন্ট, টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিটিক্যালের বিক্রয় প্রতিনিধি ইত্যাদি পদের চাহিদা অনেক। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে খানিকটা কষ্ট হলেও দেশের সেরা বেসরকারি চাকরি মধ্য এটাই অন্যতম। টেকনিক্যাল কোন পেশায় যোগদান করার জন্য অবশ্যই সেই বিষয়ের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। তবে ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি গুলোর সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে যোগদান করার জন্য বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি ও যেকোনো বিষয়ে ডিগ্রি বা অনার্স ডিগ্রী হলেই অ্যকপ্লিকেশন করা যায়।
মার্কেটিং এর চাকরি
তরুণদের মধ্যে এই পদে যোগদান করার প্রবণতাও অনেক রয়েছে। স্বনামধন্য অনেক প্রতিষ্ঠানে তাদের পণ্য বিক্রয়ের জন্য মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে লোক নিয়োগ প্রদান করে। তবে এই পদে ফিল্ডে কাজ করতে হয়। নির্ধারিত এলাকায় বিভিন্ন ডিলারদের সাথে কমিউনিকেশন করা, অর্ডার সরবরাহ করার কাজ বেশ কষ্টসাধ্য। শুরুতে বেতন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। সেই সাথে বিক্রয়ের উপর রয়েছে আলাদা বোনাস।
বিভিন্ন স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠানে চাকরি
দেশে উদ্যোক্তাদের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন স্টার্ট আপ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। এ সকল ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানে অপারেশন ম্যানেজার, প্রোডাক্ট ম্যানেজার ইত্যাদি পদে বিপুল সংখ্যক লোক নিয়োগ প্রদান করা হয়। আর স্টার্ট প্রতিষ্ঠান বেশিরভাগই হয়ে থাকে ঢাকা কেন্দ্রিক। তবে এই সেক্টরে যোগদান করার জন্য আপনার প্রয়োজন প্রচন্ড পরিশ্রম করার মানসিকতা। সঠিক পরিশ্রম এবং ধৈর্যের সাথে লেগে থাকলে প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে নিজেকে ভালো উন্নতি করা যায়।
যেকোনো সেক্টরে ক্যারিয়ার করার জন্য দক্ষতা প্রশিক্ষণ অভিজ্ঞতা ধৈর্য শিক্ষাগত যোগ্যতা সকল বিষয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার মানসিকতা এবং কি কাজ করতে পছন্দ করেন সেটি উপর ভিত্তি করেই পেশা নির্ধারণ করা উচিত। উপর উপরে উল্লেখিত বাংলাদেশের সেরা বেসরকারি চাকরি গুলো থেকে আপনি যেকোনো একটি পছন্দ করে নিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন এই সেক্টরে ধৈর্য সহকারে লেগে থাকলে ভালো বেতনে চাকরি করা যায়। আর প্রাইভেট জব গুলোর কে কে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আরেকদিন আলোচনা করব।