রোজা রেখে চুল দাড়ি কিংবা নখ কাটা যাবে কি

প্রতিটি মানুষেরই অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার মধ্যে থাকা উচিত। আমরা মুসলমানরা যেহেতু দিনের বিভিন্ন অংশে নামাজ, রোজা ও ইবাদত বন্দেগী করে থাকি তাই নিজেকে পবিত্র রাখা জরুরি। তাইতো রোজা রেখে চুল কাটা যাবে কিনা এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। এমনকি শরীরে অন্যান্য অংশের লোম, নখ ইত্যাদি পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও নানা জনের ক্ষেত্রে নানা রকম প্রশ্ন।

ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবশ্যই এই অবাঞ্ছিত লোমগুলো পরিষ্কার করা উচিত। তাইতো ব্যস্ততার কারণে রমজানের আগে প্রস্তুতি গ্রহণ করা না হলেও রোজা রেখে অনেকেই চুল নখ কাটা সহ নানা ধরনের প্রস্তুতি নিতে চান। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে যে রোজা রেখে চুল কাটা যাবে কিন? কিংবা শরীরের অন্যান্য অংশের লোমগুলো পরিষ্কার করা যাবে কিনা।

এ ব্যাপারে আলেমগণের মতামত হচ্ছে রোজা পালন করা অবস্থায় কেউ যদি চুল কাটে, হাতের নখ কাটেন, অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করেন তাহলে তার রোজা কোনভাবেই নষ্ট হবে না। এমনকি এটি মাকরুহও নয় বরং এটি জায়েজ রয়েছে। রোজার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। ইবাদত বন্দেগির ক্ষেত্রে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অনেক ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক। তাই সবচাইতে উত্তম পদ্ধতি হলো এগুলো পরিষ্কার করে নেওয়া। অনেক আলেমগণ বলেছেন রোজা রেখে দাড়ি সেভ করলেও রোজা ভাঙবে না। তবে আমাদের প্রিয় নবী রাসূল (সা.) এর সুন্নত অর্থাৎ দাড়ি রাখা অবশ্যই অনুসরণ করা উচিত।

রোজা রেখে কি কি কাজ করা যাবে আর কি কি করা যাবে না

• সিয়াম পালনরত অবস্থায় মুখ দিয়ে কোন ধরনের ওষুধ গ্রহণ করা যাবে না। এমনকি শরীরের অন্যান্য অংশ যেমন কান নাক, কান কিংবা মলদ্বার দিয়েও কোন ধরনের মেডিসিন গ্রহণ করা যাবে না। এতে করে রোজা ভেঙে যায়। সহজ ভাষকয় বলতে গেলে যে সকল মেডিসিন মুখ ছাড়া অন্য কোন অংশ দিয়ে শরীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করালে তা পাকস্থলীতে যায় সেগুলোর কারণে রোজা ভেঙে যায়।

আবার অনেক আলেমগনের মতে প্রজারত অবস্থায় জীবন রক্ষাকারী সকল ধরনের ইনজেকশন যেমন করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন ইত্যাদি নেওয়া যাবে। এমনকি জরুরী চিকিৎসা সেবার জন্য এনজিওগ্রাম, আল্ট্রাসনোগ্রামও করা যাবে। আবার কোন রোগী যদি ওষুধ মিশ্রিত কোন অক্সিজেন গ্রহণ করে তাহলে রোজা ভেঙে যায়। সাধারণ অক্সিজেন গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হবে না।

রোজা অবস্থায় শরীরের ক্ষতস্থানে মলম দেওয়া, ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের তেল এবং সুগন্ধী ব্যবহার করা যাবে।

রোজা রেখে চুল কাটা সম্পর্ক তো জানলেন। এবার চলুন খাবার সম্পর্কে তো নিয়মগুলো জেনে নেই। আপনার দাঁতের মধ্যেও যদি একটি ছোলার সমপরিমাণ বা তার চাইতে বেশি খাবার আটকে থাকে এবং সেটা যদি আপনি গিলে ফেলেন তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে সেই খাবারের পরিমাণ যদি ছোলার পরিমাণের চাইতে কম হয় তাহলে রোজা ভাঙবে না।

যেকোনো ধরনের ধূমপান করলেও রোজা ভেঙে যাবে। এটি রোজা ভাঙার কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম। এমনকি ইচ্ছায় বিভিন্ন ধরনের আগরবাতির ধোঁয়া নিজের ভেতরের নিলেও সেটি রোজা ভাঙ্গার কারণ। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে রাস্তাঘাটের ধুলা বালি কিংবা রান্না করার সময় ধোঁয়া ইত্যাদি নাকে মুখে প্রবেশ করে তাহলে রোজার কোন ক্ষতি হবে না।

এমনকি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলেও রোজা ভেঙে যাবে।

স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়

সেহেরি ও নামাজের পর ঘুমানোর মধ্যে যদি কারো স্বপ্নদোষ হয় তাহলে ওদের কোন ক্ষতি হয় না। এমনকি দিনের বেলা এটিই হলেও সিয়ামের নষ্ট হবে না। আশা করি রোজা ভাঙ্গার কারণ এবং রোজা রেখে চুল কাটা সম্পর্কে আপনারা সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। সে আমরা তো অবস্থা বিভিন্ন ধরনের টুথপেস্ট এব মাজন ব্যবহার না করাই ভালো। টুথপেস্টের বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় উপাদান গলার ভেতরে চলে যেতে পারে। তবে গাছের ডাল কিংবা মেসওয়াক দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা জায়েজ রয়েছে। একইভাবে আমাদের মুখেও অনেক বেশি সংযত রাখতে হবে। পরনিন্দা করা অশ্লীল কথা বলা মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

Leave a Comment