কর্মসংস্থানের জন্য প্রতিনিয়তই বাংলাদেশের মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যায়। আবার কেউ কেউ চায় উন্নত কোন কান্ট্রিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করা। আমেরিকার গ্রিন কার্ড কি এবং এটির সুবিধা জানা এক্ষেত্রে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ হচ্ছে যদি আপনি ইউএসএ সেটেল হতে চান তাহলে অবশ্যই এই কার্ড প্রয়োজন।
গ্রীন কার্ড হচ্ছে এমন একটি নথি কিংবা কার্ড যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে আমেরিকার স্থায়ীভাবে বসবাসকারী একজন নাগরিক বলে দাবি করতে পারেন। এই নতুন মাধ্যমে একজন ব্যক্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে উক্ত এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা বা এলপিআর হিসেবে পরিচিত দেয়।
২০১৯ সালের একটি তথ্য অনুযায়ী আমেরিকাতে ১৩.৯ মিলিয়ন গ্রীন কার্ড ধারী মানুষ রয়েছে। এর মধ্যেও প্রায় ৬৫ হাজার ব্যক্তি মার্কিন বাহিনীতে কাজ করছেন।
এই কার্ডের মাধ্যমে সাধারণত স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়া যায়। যারা কিনা ভালো এবং নৈতিক চরিত্রের অধিকারী এবং বিগত অনেক বছর ধরে নিরবে বিচ্ছিন্নভাবে আমেরিকায় বসবাস করছেন তাদেরকেই মূলত এই গ্রিন কার্ড দেওয়া হয়।
আমেরিকার গ্রীন কার্ড কি
এর নামের পেছনে রয়েছে একটি ইতিহাস। ঐতিহাসিক সবুজ রঙের কারণেই এটি সবুজ রঙের কার্ড নামেই বেশি পরিচিত লাভ করেছে। শুরুর দিকে এটি নাম ছিল এলিয়েন রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট। যদি কোন অভিবাসির এই ধরনের কার্ড বা রশিদ কার্ড না থাকতো এবং তার বয়স যদি ১৮ বছর বা তার বেশি হতো তাহলে কার্ড বহন না করার জন্য ৩০ দিন পর্যন্ত জেল পরিমাণ জেল হত।
বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ হতে ডিভি লটারির মাধ্যমে অনেক মানুষ পেয়ে বর্তমানে আমেরিকাতে বসবাস করছে।
গ্রিন কার্ডের সুবিধা কি কি
এর বহুল সুবিধাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্থায়ীভাবে বসে বসে অনুমতি। এর পাশাপাশি যারা কিনা এই রশিদ বা নথিটি পেয়েছে তারা সেখানে বৈধ একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ উপায়। প্রথমদিকে বৈধ ভাবে বসবাসের অনুমতি দিলেও পরবর্তীতে এটির মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়।
যেমন বাংলাদেশ হতে আপনি আমেরিকায় গিয়েছেন এই কার্ডের মাধ্যমে। পরবর্তীতে আপনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্যও এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আমেরিকার গ্রীন কার্ড পাওয়ার উপায় কি কি
অন্যতম অর্থ হচ্ছে ডিভি বা ডাইভারসিটি ভিসা লটারি। এর মাধ্যমে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও যোগ্য ব্যক্তিদের লটারি মাধ্যমে কার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে।
আবার যাদের কিনা পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য ইতিমধ্যে এই আমেরিকায় বসবাস করছেন তাদের মাধ্যমেও স্পন্সরশিপ নিয়ে কর্মসংস্থানের জন্য আবেদন করা যায়। আবার নির্দিষ্ট শর্তে শরনার্থী আশ্রয়প্রার্থীদেরকেও এই সুযোগ প্রদান করা হয়ে থাকে।
পরিবার-পরিজন নিয়ে আর্থিক সচ্ছলভাবে চলা এবং জীবিকার তাগিতে আমরা অনেক ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। দেশে হয়তো বা ভালো কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অহরহ মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের পাড়ি জমাচ্ছে। এই দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইউএস। শুধুমাত্র কাজই নয় বরং লেখাপড়া উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যেও বাংলাদেশের মানুষদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষ রয়েছে এটি।
আর যেহেতু উন্নত জীবন যাপনের সুবিধা রয়েছে তাই অনেকে স্থায়ীভাবে বসবাসের আকাঙ্ক্ষাও পোষণ করে থাকেন। তারা নিশ্চয়ই এখন বুঝতে পেরেছেন আমেরিকার গ্রীন কার্ড কি এবং এর সুবিধা গুলো কি কি। যদিও একসময় বাংলাদেশের মানুষদের জন্য ডাইভারসিটি ভিসা লটারি পদ্ধতি চালু ছিল কিন্তু বর্তমানে এটি বন্ধ রয়েছে। যখন এর আবেদন আবার শুরু হয় তখন আপনাদেরকে আমরা জানিয়ে দেবো।
কিভাবে আমেরিকার ভিসা পেতে পারেন
উন্নত রাষ্ট্র হওয়ায় এই দেশের ভিসা পাওয়া কিংবা ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া দেশ কঠিন ব্যাপার। তবে যদি বিপুল পরিমাণ অর্থ থাকে এবং সেগুলো আপনি উক্ত দেশে ইনভেস্ট করেন কিংবা ব্যবসায় চালু করেন তাহলে আপনার জন্য এদেশের ভিসা পাওয়া অনেকটাই সহজ।
আর যদি কোন ফ্যামিলি মেম্বার যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ ইতিমধ্য সেখানে কাজ করছে তারা যদি আপনাকে স্পন্সর দেয় তাহলে আপনি খুব সহজেই আমেরিকায় প্রবেশ করতে পারবেন।
যারা কিনা বর্তমানে লেখাপড়া করছে তারা উক্ত দেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করে স্কলারশিপ পেলেও সেখানে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে যেতে পারবেন। এর জন্য অবশ্য আইইএলটিএস বেশ বেশ কয়েকটি ধাপ উত্তীর্ণ হতে হয়। আবার যথাযথ যোগ্যতার সাপেক্ষেও আমেরিকার কোন প্রতিষ্ঠানে যদি চাকরি পান তাহলে তাদের মাধ্যমে আপনি ভিসা পেতে পারেন।