আর দুদিন পরেই বাঙালির ঐতিহ্যময় অনুষ্ঠান পহেলা বৈশাখ। যার পরিপ্রেক্ষিতে এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করা হলো। এবারের নাম রাখা হয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রা। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইউনিটের একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। উক্ত নামটি প্রকাশ করেছেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম শেখ।
বাঙালির যাতে যতগুলো সাংস্কৃতিক মূলক অনুষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পহেল্ বৈশাখ। এই দিনটি তে সকল প্রতিষ্ঠানে বন্ধ ঘোষণা থাকে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় গ্রামের গঞ্জের শহরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ সকল মেলাগুলি তিনদিন থেকে এক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। নারী-পুরুষ শিশু নির্বিশেষে এই সকল মেলায় অংশগ্রহণ করে। ঢাকার পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সবচাইতে জনপ্রিয় হচ্ছে রমনার বটমূল।
বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখের এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ১৯৮৯ সাল থেকে। সে সময়ে এটির নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। পরবর্তীতে নব্বইয়ের এটি নাম রাখা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। মূলত সকল প্রকার অমঙ্গল এবং অনিষ্ট দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানানোর বাসায় কে কেন্দ্র করে এই নামটি রাখা হয়েছিল। নববর্ষ কে কেন্দ্র করে রমনা পার্কে ছায়ানটের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল ১৯৬০ এর দশকে। পরবর্তীতে এটি ঢাকার এবং আশেপাশের মানুষজনকে আকৃষ্ট করতে থাকে। সেই সাথে বাংলার বছরের প্রথম দিনের আয়োজনে যুক্ত হয় নতুন মাত্রা।
পহেলা বৈশাখে আনন্দ শোভাযাত্রা
এমনকি অসংখ্য মানুষ নিয়ে এই মঙ্গল শোভাযাত্রাটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকৃতি ও থাকে। যার মধ্যে রয়েছে ইলিশ মাছ ও অন্যান্য গ্রাম বাংলার প্রতিকৃতি। পহেলা বৈশাখে আগে থাকে চৈত্র সংক্রান্তির আয়োজন। আমরা ছোটবেলার সাথে এ নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে।
এমনকি পহেলা বৈশাখে কেন্দ্র করে আমাদের অনেক উৎসব রয়েছে। গ্রামের মানুষের বিনোদনের উৎস গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল এটি। বিভিন্ন ধরনের খেলনা, খাবার, বাঙালি হাতে তৈরি জিনিসপত্র এখানে কিনতে পাওয়া যায়। বর্তমানে শহর এলাকার বড় বড় মেলাগুলোতে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করতে আসে অনেকটা বাণিজ্য মেলার মতন।
বাংলা নববর্ষের সাথে সাথে শুরু হয় নতুন ধানের উৎসব। এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে পিঠাপুলির আয়োজন।
এই মৌসুমের সাধারণত তীব্র গরম থাকে। তবু এই তীব্র গরম কে উপেক্ষা করে অসংখ্য মানুষ বাঙালির এই সংস্কৃতিতে শামিল হয়। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম পরিবর্তন নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছিল। অবশেষে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে ঢাবিচারীকোলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল এই নিয়ে নিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি আরো জানান এবারের বাংলা নতুন বছরের আয়োজনে সকল অনিরতাকে বিনাশ করে সততা ও ন্যায্যের আলোর প্রতিকারের পুরো সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।