ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত নুহাশ পল্লী। গাজীপুর জেলার সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি জড়িত এই স্থানটি প্রায় ৪০ বিঘা জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে। নামকরণ করা হয়েছে তার বড় ছেলে নুহাশের নামে।
হুমায়ূন আহমেদ তার জীবনের দীর্ঘ একটু সময় এই মাস পল্লীতে কাটিয়েছেন। এমন কি এখানকার প্রতিটি স্থাপনা এবং তানে মিশে আছে তার ছোয়া। হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন কবিতা নাটক উপন্যাসে এই স্থানের কথা বারবার উঠে এসেছে।
নুহাশ পল্লীতে গেলে কি কি দেখতে পারবেন
মূল দরজা পার হলে আপনি দেখতে পারবেন সবুজ ঘাস সেই সাথে খুবই শান্ত পরিবেশ। চারিদিকে লাগানো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওষুধি এবং মসলা জাতীয় গাছ। এমনকি প্রত্যেকটি গাছের সাথে আলাদা করে লাগানো আছে সেটির পরিচিতি। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশে রয়েছে কাঠের কটেজ এবং সেই সাথে সুইমিং পুল।
শিশু-কিশোরদের বিনোদন দেওয়ার জন্য এখানে রয়েছে ভূত বিলাশ নামের আরও একটি করে। তার পাশে রয়েছে দীঘি লীলাবতী। এমনকি এই দীঘির মাঝখানে ছোট একটি দ্বীপও রয়েছে যেটা যাওয়ার জন্য পার হতে হয় সাকো।
নুহাশ পল্লীতে কিভাবে যাবেন
যদি ঢাকা থেকে যেতে চান তাহলে প্রথমে আসতে পারবে আসতে হবে গাজীপুর চৌরাস্তা। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ রোডে যে কোন গাড়িতেই আপনি চৌরাস্তা আসতে পারবেন। আর যদি ট্রেনে করে আসেন তাহলে জয়দেবপুর জংশন এ নেমে অটোতে কিংবা রিক্সা করে চৌরাস্তা আসতে পারবেন মাত্র কয়েক মিনিটেই। তবে লোকাল গাড়ির যেগুলো রয়েছে সেগুলো রাস্তায় অনেকক্ষণ দেরি করে। তাই চেষ্টা করবেন ময়মনসিংহগামী সিটিং সার্ভিস গাড়িতে ওঠার জন্য।
চৌরাস্তা থেকে আপনাকে যেতে হবে হোতাপাড়া। এজন্য আপনি উঠতে পারেন সিএনজি কিংবা গাড়িতে। হোতাপাড়া থেকে সিএনজিতে করে নুহাশ পল্লীতে যাওয়ার জন্য ভাড়া প্রয়োজন হবে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। তবে সময় এবং পরিস্থিতি বেঁধে ভাড়া কম কিন্তু বেশি হতে পারে। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে হোতাপাড়ার দূরত্ব মোট ১২ কিলোমিটার এবং হোতাপাড়া থেকে নুহাশ পল্লীর দূরত্ব ৮ কিলোমিটার।
নুহাশ পল্লীতে প্রবেশের জন্য কত টাকা টিকিট কাটতে হয়
এমনিতে সাধারণ সময় প্রবেশ করার জন্য কোন অনুমতির প্রয়োজন হয় না। তবে ১২ বছরের উপরে সকলদের জন্য প্রবেশের জন্য ফি প্রদান করতে হয় ২০০ টাকা। ১২ বছরের নিচে শিশুদের জন্য কোন ফ্রি নেই।। আর যারা গাড়ি চালক কিংবা ড্রাইভার তাদের জন্য কোন ফ্রি দিতে হয় না।
পর্যটকদের কাছ থেকে নেওয়া এই মূলত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নির্মিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের ব্যয় নির্বাহের জন্য খরচ করা হয়। আর কেউ যদি হুমায়ূন আহমেদের কবর জিয়ারত করতে চান তার জন্য কোন ফি প্রদান করা হয় না। বাইরে থেকে আপনি আলাদাভাবে সরাসরি আরেকটি ফটক দিয়ে প্রবেশ করে কবর জিয়ারত করতে পারবেন।
নুহাশ পল্লীতে ঘোরাফেরা এবং খাওয়া-দাওয়া
এই দর্শনীয় স্থানটির ভেতরে তেমন কোন খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তবে বাইরে কিছু ছোট ছোট দোকান আছে। যেখান থেকে আপনি চাইলে চা পানি কিংবা যেকোনো ধরনের শুকনো খাবার খেতে পারবেন। আবার চাইলে দুপুরের খাবার সাথে করে নিয়ে যেতে পারবেন অথবা হোতাপাড়া এসেও খেতে পারবেন।
নুহাশ পল্লীর থাকার কোন ব্যবস্থা নেই তবে বৃষ্টি বিলাশে সবার জন্য রয়েছে বিশ্রামের ব্যবস্থা। আর আপনি যদি ভূত-বিলাস বাংলোতে বিশ্রাম নিতে চান তাহলে খরচ করতে হবে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।