বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নাম পরিবর্তন

যমুনা নদীর উপর অবস্থিত বাংলাদেশের বৃহত্তম রেল সেতুর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলার সাথে সিরাজগঞ্জ জেলা সংযোগকারী এই রেল সেতুর নাম ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল সেতু। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সে নাম পরিবর্তন করে নির্ধারণ করেছে যমুনা রেল সেতু।

বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ২২ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে এই তথ্য গুলি জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন। তিনি সাংবাদিকদেরকে আরো বলেন যমুনা নদীর উপর নির্মিত নাম বঙ্গবন্ধু রেল সেতু থাকছে না। যমুনা রেল সেতু নামে এটি উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। যমুনা রেল সেতু আসছে আসছে বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগেও চলতি বছরের শেষ অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে অথবা ২০২৫ সালের প্রথমদিকে উদ্বোধন করার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মহাপরিচালক আরো জানান বর্তমানে যমুনার উপর বঙ্গবন্ধু সেতুতে একটি রেল সংযোগ রয়েছে যেটি মূলত মিটার গেজ। এদের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৪৩.৭০ কিলো নিউটন/মিটার ওজন বহনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে একটি ট্রেনের সাথে বেশি যুক্ত করার অনুমোদন নেই। প্রতিটি ট্রেন এই সেতুর উপর দিয়ে ঘন্টায় ২০ কিলোমিটার বেগে পার হতে পারবে। এতে করে সময় লাগে প্রায় ২৫ মিনিটের মত। এর আগে সেতুর ওপর দিয়ে মাত্র একটি লাইন যাওয়ায় দুই পাশে দীর্ঘ সময় সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হতেও রেল গুলোকে। সব মিলিয়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন হতো ১ ঘন্টারও বেশি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নাম পরিবর্তন

এমনকি যমুনা রেল সেতুর নাম পরিবর্তন করার পর দুই পাশের সেতু পূর্ব স্টেশনের নাম রাখা হয়েছে ইব্রাহীম আবাদ ও সয়দাবাদ। টাঙ্গাইলের অংশ রেল স্টেশনের নাম ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন এবং সিরাজগঞ্জ অংশের স্টেশনের নাম সয়দাবাদ স্টেশন।

উল্লেখ্য যুব উন্নয়ন ওদের উপরে এই বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু চালু হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। এর মাধ্যমে ঢাকার সাথে উত্তর অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো বেশি উন্নত হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে সেতুটিতে একটি ফালতু দেখা যায়। যার কারণে কমে দেওয়া হয় ট্রেনের গতি। ধারাবাহিকতায় বর্তমানে প্রতিদিন ৩৮ টি ট্রেন চলাচল করতে পারছে এবং সর্বোচ্চ গতি ২০ কিলোমিটার।

এই সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ৩ই মার্চ যমুনা নদীর উপর একটি বঙ্গবন্ধু ২০১৭ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যার পরেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল এবং প্রকল্পটি নির্মাণের ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ৭৮০কোটি ৯৬ লাখ টাকা। বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায় উক্ত নির্মাণকাজের এবং ব্যয়ের ২৭.৭ শতাংশ এই দেশীয় উৎস থেকে অর্থায়ন করা হয়েছে। এবং বাকি অংশ এসেছে জায়গা থেকে।

টাঙ্গাইল জেলার এলাঙ্গার পরেই অবস্থিত যমুনা নদীর উপর এই সেতুটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিনিয়তই এই সেতুর মাধ্যমে শত শত যানবাহন উত্তরবঙ্গে যাতায়াত করে। এতে করে যাদের ব্যবস্থা যেমন উন্নতি হয়েছে তেমনি মানুষের সুবিধা হয়েছে অনেক।

Leave a Comment