ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুমের মধ্যে কোনটি বেশি উপকারী

পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডিম। ডিমের আবার ২টি ভাগ থাকে যার সাদা অংশে থাকে প্রোটিন এবং হলুদ অর্থাৎ কুসুমে থাকে কোলেস্টরেল, ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি এসিড এবং ভিটামিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিউট্রিশনিস্ট এবং ডাক্তাররা ডায়েটের জন্য শুধুমাত্র ডিমের সাদা অংশ খেতে বলেন।

আবার যাদের কিনা হার্টের সমস্যা রয়েছে কিংবা হ্রদযন্ত্র ভালো থাকতে চান তাদের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুম খেতে বারণ করা হয়। তবে কি ডিমের কুসুমে তেমন কোন পুষ্টিগুণ নেই কিংবা শরীরের জন্য এটি ক্ষতিকর? এ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন।

যারা কিনা ওজন কমানো ওজন বৃদ্ধি বা বিভিন্ন কারণে ডায়েট করেন তাদের প্রতিদিন ২টি করে ডিম খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে একই দিনে ২টি ডিমের কুসুম খাওয়া দেহের জন্য কিছুটা ক্ষতিকর। তাই সাদা অংশ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা।

এব্যাপারে একটি বিষয় মনে রাখবেন, একজন সুস্থ সকল ব্যক্তি একদিনে মাত্র একটি পুরো ডিমে খেতে পারেন। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং কমবে বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ২টি ডিমের কুসুম খাওয়া উচিত নয়।

ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুমের মধ্যে কোনটি বেশি উপকারী

১। ক্যালোরি

একটি ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুমের মধ্যেও ক্যালোরির পার্থক্য রয়েছে। যেখানে কুসুমে রয়েছে ৫৫ ক্যালোরি সেখানে সাদা অংশ রয়েছে মাত্র ১৭ ক্যালরি।

২। প্রোটিন

ডিমের কুসুমের তুলনায় সাদা অংশে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি। এই পার্টটিকে অ্যালবুমিন বলা হয়ে থাকে। এমনকি উচ্চতর প্রোটিন থাকায় একে পাওয়ার হাউসে বলা হয়। যাদের মাথা ঘোরায় কিংবা ওজন কমাতে চান তাদের ক্ষেত্রে এটি খুবই প্রয়োজনীয়।

৩। চর্বির পরিমাণ

ডিমের সাদা অংশের কোন চর্বির অস্তিত্ব নেই। কিন্তু কুসুমে বেশ ভালো পরিমাণে ফ্যাট রয়েছে। যেটিকে বলা হয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। এছাড়াও রয়েছে কোলেস্টেরল। এগুলো মূলত কোষের আবরণ গঠনের সাহায্য করে। তার পাশাপাশি ভালো রাখে।

৪। কোলেস্টেরল

অনেকেই এটির ভয়ে ডিমের কুসুম খাওয়া একেবারেই পারতেন। কিন্তু আপনি কি জানেন শরীরের টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করার জন্য আমাদের দেহের প্রয়োজন কিছু পরিমাণে কোলেস্টেরল। এটি দেহের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি বেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।। এমনকি আমাদের দেহে উপস্থিত ফ্যাটি এসিড তৈরি করার অন্যতম কাজ এটি। যদিও খামারে যদি কোলেস্টেরল না থাকে তাহলে লিভার এটি নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন। আর ডিমের কুসুমেও রয়েছে কিছু পরিমাণে কোলেস্টেরল।

৫। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন উপাদান

ডিমের কুসুমে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন উপাদান। এটি আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। অপর দিকে এটি ডিমের সাদা অংশ রয়েছে ভিটামিন বি এবং উন্নত মানের প্রোটিন।

৬। খনিজ পদার্থ

আপনি জেনে অবাক হবেন যে ডিমের প্রায় ৯৩% আয়রনই রয়েছে এটির কুসুমে। সাদা অংশ বা অ্যালবুমিনে রয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ। এই আয়রন উপাদান গুলি আমাদের দাঁত এবং হাড়ের জন্য খুবই প্রয়োজন। তাছাড়া সাথে অংশের পটাশিয়াম আমাদের হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে। এমন কি এতে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে।

তবে ডিমের সাদা অংশ নাকি কুসুম কোনটি খাবেন আর কোনটি বাদ দিবেন সেটির সম্পূর্ণ নির্ভর করবে চিকিৎসকের পরামর্শের উপর। তিনি আপনার শারীরিক সমস্যা ও রোগগুলি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে দেবেন। তবে সব সময় চেষ্টা করবেন ডিমকে পূর্ণভাবে সিদ্ধ করে খাওয়ার জন্য। এতে করে অনেক বেশি উপকার মিলবে এবং অন্যান্য ঝুঁকিও কমে যাবে।

Leave a Comment