সম্প্রতি চীনের হুনান প্রদেশে একটি সোনার খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি হতে পারে পৃথিবীর সবচাইতে বড় সোনার খনি। যদিও এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি তবুও এটাতে মজুদকৃত সোনার দাম আনুমানিক হতে পারে ৬০০ বিলিয়ন ইউয়ান।
আপনার মনে কখনো কি প্রশ্ন জেগেছে বিশ্বের সবচাইতে বড় বড় সোনার খনি গুলো কোথায় অবস্থিত। চলুন আজকে সে সম্পর্কেই জানবো।
১। মুরুনতাউ খনি
এটি অবস্থিত উজবেকিস্তানের ভিয়োলাতি এলাকাতে। এই গোল্ডমাইনটি আবিষ্কৃত হয় মূলত ১৯৫৮ সালে। আয়তনের দিক থেকে এটি প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের দিক থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার। ২০১৩ সাল পর্যন্ত এখান থেকে সোনা উত্তোলন করা হয়েছে প্রায় ১৮ লাখ। বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী এখান থেকে আগামী ২০৩২ সাল পর্যন্ত গোল্ড উত্তোলন করা যাবে।
আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য বলে রাখছি ১ লক্ষ আউন্সে প্রায় ২৮৩৫ কেজি।
২। কারলিন গোল্ড মাইন
এটি অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যে। পৃথিবীর সবচাইতে বড় সোনার খনি গুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। এর মালিকের নাম হচ্ছে বারিক গোল্ড। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এখান থেকে সর্বমোট গোল্ড উত্তোলন করা হয়েছে ১৫ লাখ ৯০ হাজার। ২০৩২ সাল পর্যন্ত গোল্ড উত্তোলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
৩। অলিম্পিয়াদো খনি
এটি অবস্থিত রাশিয়াতে। ১৯৭৫ সালে আবিষ্কৃত হওয়া এই খনিটি থেকে এখন পর্যন্ত সোনা উত্তোলনের পরিমাণ হচ্ছে ১১ লাখ ৭০ হাজার আউন্স। বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী এটি হতে ২০৪৫ সাল পর্যন্ত গোল্ড উত্তোলন করা যাবে।
৪। কর্টেজ সোনার খনি
এটি অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের। এমনকি এর মালিক হচ্ছেন বারেক গোল্ড। যারা আরো একটি গোল্ড মাইন রয়েছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ আউন্স গোল্ড উত্তোলন করা হয়েছে এটি থেকে। যেটি আগামী আরও ৭ বছর পর্যন্ত চলতে পারে।
৫। গ্রাসবার্গ ব্লক কেভ সোনার খনি
পৃথিবীর বড় এ সোনার খনিটি মূলত ভূ-গর্ভস্থ খনি। যার অবস্থান ইন্দোনেশিয়াতে। এখান থেকে উন্মুক্ত ভাবে এবং ভূ-গর্ভস্থ দুইভাবেই গোল্ড উত্তোলন করা হয়ে থাকে।
২০৪১ সাল পর্যন্ত এই মাইন থেকে গোল্ড উত্তোলন করা যাবে এবং এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৩৭ হাজার আউন্স পরিমাণ সোনা উত্তোলন করা হয়েছে।
আরো বেশ কিছু পৃথিবীর সবচাইতে বড় সোনার খনি
• বডিংটন সোনার খনি অবস্থিত অস্ট্রেলিয়াতে। এটি একটি ব্রাউনফিল্ড ফোনে যেখান থেকে ৭ লক্ষ ৮৬ হাজার অউন্স পরিমাণ গোল্ড ইতিমধ্যে তোলা হয়েছে। আগামী ১১ বছর পর্যন্ত এটির কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানা গিয়েছে
• পাপুয়া নিউগনিতে অবস্থিত রয়েছে একটি গোল্ড মাইন। যেটি আবিষ্কৃত হয় হাজার ১৯৮৩ সালে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে সোনা উত্তোলনের কাজ রয়েছে এবং যদি অব্যাহত থাকবে আগামী ২০৪৯ সাল পর্যন্ত।
পৃথিবী জুড়ে ব্যবহার্য দামি ধাতু গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গোল্ড। নারী এবং পুরুষদের বিভিন্ন গহনার কাজ ছাড়াও এর নানা ব্যবহার বিদ্যামান রয়েছে। এমনকি বিগত অনেক বছর ধরে এর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই এটিকে ইনভেস্টমেন্টের বড় একটি সেক্টর হিসেবেও দেখে থাকেন। তাইতো টাকার খরচ করে গোল্ড কিনে সঞ্চয় করেন এবং ভালো দাম পেলে সেগুলো বিক্রি করে দেন।
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন সোনা একটি ধাতু। আর এটি সংগ্রহ করা হয় খনি থেকে। তারপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পরিশোধন করে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সোনার খনি গুলো সম্পর্কে আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন।