আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশ খুব একটি বৃহৎ নয়। পৃথিবীতে এর চেয়ে আকৃতিতে বড় অনেক দেশ রয়েছে। তবে অর্থনীতি, প্রাকৃতিক পরিবেশ, মানবসম্পদ, খনিজ সম্পদ, শিল্প কারখানা, পর্যটন ইত্যাদি দিক থেকে পৃথিবীতে অন্যতম দেশ হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশ। আমরা জানি দেশটিতে মোট জেলা সংখ্যা ৬৪ টি। সাম্প্রতিক সময়ে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের সবচাইতে ধনী জেলা নোয়াখালী।
তথ্যটি শুনে নিশ্চই অবাক করছেন? আপনি মনে মনে হয়তো ধারণা করেছিলেন হয়তো ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের মত বাণিজ্যিক এলাকা গুলো ধনীদের তালিকার সবচাইতে উপরে রয়েছে। একইভাবে দেশের সবচাইতে গরিব জেলা হচ্ছে মাদারীপুর। যেখানকার ৫৪.৪ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করেন। উক্ত জেলার মধ্যে আবার ডাসা ইউনিয়নে দারিদ্রতার হার সবচাইতে বেশি। যেখান ৬৩.২% মানুষ তাদের সীমার নিচে রয়েছে।
বাংলাদেশের সবচাইতে ধনী জেলা কোনটি
বাংলাদেশের মানচিত্রে নোয়াখালী অন্যতম একটি জেলা। এমনকি ইন্টারনেটেও এই জেলাকে নিয়ে বেশ আলোচনা এবং নানা ধরনের সমালোচনাও হয়ে থাকে। উপজেলা ব্যক্তি হিসাব করলে এই জেলায় দরিদ্র সীমার নিচে রয়েছে মাত্র ৬১.১ শতাংশ মানুষ। এরকম এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বাংলাদেশের দারিদ্র মানচিত্র ২০২২ এর একটি প্রতিবেদনে। এই রিপোর্টটি তৈরি করেছে বিবিএস বা বাংলাদেশ বুরো অব পরিসংখ্যান।
উক্ত প্রতিবেদনে আরো পরিলক্ষিত হয়েছে যে বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় দারিদ্রতা হার কমলেও শহর এলাকায় বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। এমনকি রাজধানীর সহ বিভিন্ন শহর এলাকায় দরিদ্র এবং ধনী ব্যক্তিদের মধ্য যে বৈষম্য রয়েছে সেটির দিন দিন আরও বিস্তরভাবে ফুটে উঠছে। সারা দেশ বিবেচনায় ১৯.২ শতাংশ মানুষই আন্ডার প্রভার্টি লাইনে রয়েছে। এবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্রামে দরিদ্র লোকের সংখ্যাও সবচাইতে বেশি। অর্থাৎ সার্বিক বিবেচনা এটি বলা যায় যে দারিদ্র লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে ধনী ও গরিবের মধ্যে ব্যবধানও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাজধানী ঢাকা সহ শহর এলাকার মধ্যে সবচাইতে ধনী লোক বসবাস করে পল্টন থানায়। এছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগের ২৪.২ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। চা বাগানের শহর সিলেটে এর সংখ্যা হচ্ছে ১৭.৩%। যেটি অবশ্য আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা দেখেছি করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী জেলা নোয়াখালীর সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক পরিবর্তণ এসেছে। এই দুর্যোগ করলেন সময়ে অনেকেই যেমন তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ হারিয়েছে আবার কেউ কেউ কোঠার পরিশ্রম এবং চেষ্টার মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছে। এমনকি ঘরে বসে টাকা উপার্জন সহানার ধরনের বিজনেস আইডিয়াও এক বিপুল পরিবর্তন এসেছে এই করোনার সময়ে।
তবে তার প্রভাব এখনো মানুষের জীবনে রয়েছে। অনেকেই চিন্তা করে থাকেন হয়তো বা অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি আরো তৈরি হতে পারে। এইতো মানুষ এখন সচেতন চলাফেরা করে এবং নিজে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ অবলম্বন করছে। যার মধ্যে রয়েছে চাকরির পাশাপাশি বিজনেস করা ফ্রিল্যান্সিং করা বেশি বেশি টাকা ইনভেস্ট করা ইত্যাদি। অর্থাৎ কোন কারণে যদি জব চলে যায় তাহলে বিজনেস কিংবা অন্যান্য মাধ্যমে যেন ভালোভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
তবে অনেকেই অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশের সবচাইতে ধনী জেলা নোয়াখালী এবার জায়গা করে নিয়েছে।