চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ধূমপান ছাড়ার উপায়

বহু বছরের পুরনো অভ্যাস ধূমপান ছাড়ার উপায় গুলোকে অনেকেই বেশ কঠিন ভাবে নেয়। এর পিছনে অনেক কারণেই রয়েছে। যখনই ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন কিংবা প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হবেন তখনই আশেপাশের কাউকে দেখলে পুরনো সেই দিনের কথা মনে পড়ে যায়। মনে হয় আর একদিনই আর জীবনে কখনোই এটি হাত দিয়ে ধরবো না। এভাবে ছেড়ে দিবো বলে আর ছাড়া হয় না এবং কিন্তু ততদিনে শরীরে বেধে গিয়েছে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ।

আজ থেকে যদি বাজে এই অভ্যাসটি ত্যাগ না করতে পারেন তাহলে ক্যান্সার, হাঁপানী, ব্রংকাইটিস, নিউমনিয়ার মত নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই চলুন সুস্থ দেহ এবং সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিজেকে এই বাজে অভ্যাসে রক্ষা করি এবং আশেপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করে।

ধূমপান ছাড়ার উপায় কি

১। যখনই সিগারেট খেতে ইচ্ছা করবে কিছু পরিমাণে আমলকির অথবা এর শুকনো গুঁড়ো মুখে রাখতে পারেন। আমলকি শুকিয়ে সেটি পকেটে কিংবা বাসায় রেখে দেন। এটা চিবিয়ে খেলে আপনার সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাবে।

২। তামাকের প্রতি আসক্তি কমানোর জন্য ভেষজ চা খুবই উপকারী। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন একটি ছাড়তে গিয়ে আবার চায়ের প্রতি আসক্ত না হয়ে পড়েন।

৩। স্বাস্থ্যের যত্নে আদার অনেক অবদান রয়েছে। চায়ের সাথে কিংবা সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে আদাচি দিয়ে খেলে তামাকের প্রতি আসক্তি কমতে পারে। ছোট ছোট টুকরো করে আদা এবং লেবুর রস কিছুক্ষণ পানিতে ডুবে রাখুন। তারপরে সেখানে সামান্য পরিমাণ গোলমরিচ দিয়ে একটি কাঁচের পাত্রের সংরক্ষণ করুন। যখনই আপনার সিগারেটের কথা মনে হবে তখনই আধার টুকরাগুলো মুখে নিন।

৪। শারীরিকভাবে যত বেশি ফিট হবেন এই ধরনের তামাকের প্রতি আসক্তিও তত কমতে থাকবে। নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং দরকার হলে জিমে ভর্তি হন।

৫। যেভাবেই হোক একদিন, দুইদিন অথবা তিনদিন এটি হতে নিজেকে বিরত রাখুন। তারপর ৫ থেকে ৭ দিন এভাবে অভ্যাস করুন।

৬। যে সকল স্থানে অথবা যাদের সাথে মিশলে সিগারেট খাওয়া হয় তাদের সংঘ আস্তে আস্তে কমিয়ে দিন। অথবা তাদেরকে জানিয়ে দিন আপনি একটি ছাড়ার চেষ্টা করছেন এবং আপনার সামনে যেন এটি তারা না খায়।

৭। চুইংগাম চিবানোর অভ্যাস করতে পারেন। সিগারেটের প্রতি আকর্ষণ কমে আসবে।

৮। ধূমপানের ক্ষতিকারক দিক এবং স্বাস্থ্য স বই নিয়মিত পড়ুন। ইউটিউবে সার্চ করলে এই ধরনের অসংখ্য ভিডিও পেয়ে যাবেন।

সবশেষে দরকার আপনার সিদ্ধান্ত। নিজের মনোবল কে দৃঢ় করুন এবং আজ থেকেই ধূমপান ছাড়ুন।

ধূমপান ছাড়ার কতদিন পর ফুসফুস ফ্রেশ হয়

যারা নিয়মিত ধূমপান করেছেন তাদের মনে আরো একটি প্রশ্ন রয়েছে যে ফুসফুসের গঠন আগের মত হয়ে যাবে কিনা। চিকিৎসকরা বলে থাকেন এই অভ্যাসটি ত্যাগ করার মধ্য ফুসফুসটিকে আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এর মানে হচ্ছে হার্ট এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়বে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। এমনকি শ্বাসকষ্ট কিংবা কাশির যে লক্ষণ রয়েছে তাও ভালো হয়ে যায়।

তবে ৩ থেকে ৯ মাস যদি আপনি এই তামাক থেকে বিরত থাকতে পারেন তাহলে ফুসফুসের সিলিয়া *** গুলো অনেকটাই রিকভার করে হয়ে ওঠে। এক বছরের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি পুরোপুরি ভাবে কমে যায় এবং ১০ বছর যদি সিগারেট থেকে নিজেকে দূরে সরে রাখতে পারেন তাহলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও ৫০% কমে যায়। তাই ধূমপান ছাড়া আর উপায় গুলি আজই অনুসরণ করা শুরু করুন।

ধূমপান ছাড়ার জন্য মেডিসিন

এর জন্য নির্দিষ্ট কোন ওষুধ আপনাকে একমাত্র চিকিৎসকই বলে দিতে পারে। মানুষের কাছ থেকে শুনে কিংবা ইন্টারনেট সার্চ করে কোন ধরনের মেডিসিন সেবন করা উচিত নয়। আর ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তো রয়েছেই।

সুস্থ বিনোদনের প্রতি নিজেকে মনোনিবেশ করুন। এর জন্য মুভি দেখতে পারেন খেলাধুলা করতে পারেন কিংবা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যেতে পারেন। আর আসছে পবিত্র মাহে রমজান মাস। টানা একমাস রোজা রাখার মাধ্যমেও এই অভ্যাসটি ত্যাগ করে থাকে অনেকেই। ধূমপান ছাড়ার উপায় হিসেবে এটি সবচাইতে উত্তম একটি সময়।

Leave a Comment