আমাদের পৃথিবীতে রয়েছে নানা ধরনের রাসায়নিক উপাদান এবং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বস্তু। তার মধ্য থেকে উদ্বায়ী এবং ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থের পার্থক্য নিয়ে আজকে আমি হাজির হয়েছি। সাধারণত যে সকল কঠিন বস্তুকে তাপ প্রয়োগ করলে সেটি প্রথমে তরল গ্যাসীয় বা বাষ্পীয় অবস্থায় পরিবর্তন হয় তাকে বলা হয় উদ্বায়ী । উদাহরণস্বরূপ পেট্রোল কিংবা স্পিরিটের কথাই বলা যায়।
আবার যে সকল বস্তুকে কক্ষ তাপমাত্রা এবং এক অ্যাটমসফেরিক চাপে রাখলে কঠিন থেকে প্রথমে তরলে রূপান্তরিত না হয়ে সরাসরি বাষ্প বা গ্যাসীয় অবস্থায় রূপান্তরিত হয় তাকে বলা হয় ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ। এর অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে ন্যাপথলিন।
উদ্বায়ী এবং ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থের মধ্যে পার্থক্য কি কি
আমি ইতিমধ্যে সংজ্ঞা এবং উদাহরণ আলোচনা করেছি। এবার চলো মূল এদের পার্থক্য এবং আলাদা বৈশিষ্ট্য জেনে নেই।
• সকল উদ্বায়ী পদার্থ প্রে তরল এবং পরে গ্যাস বা বায়বীয় অবস্থায় রুপান্তিরত হয়। কিন্তু ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ প্রাথমিক অবস্থায় কঠিন থাকে এবং তা প্রয়োগ করলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়। অর্থাৎ এরা কখনো তরলে রূপান্তরিত হয় না।
• বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি উদ্বায়ী পদার্থ গ্যাসের রূপান্তরিত হয়। অপরদিকে উর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কঠিন থেকে গ্যাসে রূপান্তরিত হয় সরাসরি এবং তরলের রূপান্তরিত হওয়ার কোন প্রয়োজন পড়ে না।
• পানিকে যদি তা প্রয়োগ করা হয় তাহলে সেটি বাষ্পে পরিণত হয়। কিন্তু ন্যাপথলিনকে যদি তাপ প্রদান করা হয় তাহলে এটি কঠিন বস্তু থেকে সরাসরি বসে রূপ রূপান্তর। এই বস্তুটির লিকুইডে রূপান্তরিত হয় না।
• ঘরের তাপমাত্রাও সুগন্ধে পারফর্ম রান্নায় ব্যবহৃত ভিনেগার ইত্যাদির ক্ষেত্রে এই ধরনের উদ্বায়ী পদার্থ গুলি ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে শুকনো বরফ, জামা কাপড় পোকামাকড় মুক্ত রাখার জন্য ন্যাপথলিন এবং ধোঁয়া তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ।
• যেকোনো ধরনের উদ্বায়ী পদার্থের গন্ধ খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে অ্যাসিটোন বা পেট্রোল। আবার ন্যাপথলিন যেটি কিনা একটি ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ এদের গন্ধ আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ে।
উপরে উল্লেখিত উদ্বায়ী এবং ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থের পার্থক্য নিশ্চয়ই তোমরা এখন বুঝতে পেরেছ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা কাজে উভয় ধরনের বস্তুরী ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক সহ বিভিন্ন শ্রেণীর লিখিত অংশে এ প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়ে থাকে। রচনামূলক অর্থাৎ বড় প্রশ্নের পাশাপাশি ছোট ছোট প্রশ্নের পার্থক্য এবং উদাহরণ জানতে চাওয়া হয়।