ডিম এবং মুরগি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোতে প্রায়ই ডিম আগে না মুরগি আগে এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয়ে থাকে। এমনকি আদর্শ খাবার গুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। কিন্তু আপনি কি জানেন ডিম সেদ্ধ করলে শক্ত হয়ে যায় কেন?
ডিম এবং দুধকে অনেকে সুপারফুড বলে থাকেন। এমনকি ভারতের একটি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের কারণে একটি কথা জনপ্রিয় হয়েছে আর সেটি হচ্ছে “সানডে অর মানডে – রোজ খাও আনডে”। এখানে আনডে মানে ডিমকে বোঝানো হয়েছে।
আবার এই ডিম বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। ভেজে খাওয়া যায়, সিদ্ধ করে খাওয়া যায়, রান্না করে খাওয়া যায় এবং বিভিন্ন ধরনের রেসিপির সাথে এটি মেশানোও যায়। ইত্যাদি। কিন্তু যেভাবে আপনি খান না কেন ডিম সেদ্ধ করলে শক্ত হয়ে যায় এই ঘটনার ব্যাখ্যা কি?
ডিমের মূলত ৩টি প্রধান অংশ রয়েছে। ভেতরের সাদা অংশ, কুসুম এবং খোসা। ডিমের বাইরের শক্ত আবরণ অর্থাৎ খোসাটি ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে গঠিত। তাই এটি দেখতে সাদা রঙের হয়ে থাকে। আর ভেতরের দুটি অংশের মধ্যেও একটি কে বলা হয়ে থাকে অ্যালবুমিন এবং অপরটিকে কুসুম। এই দুইটির গঠন মোটামুটি একই রকমের।
সিদ্ধ করার পর ডিম শক্ত হয়ে যায় কেন
কুসুম হতো সাদা অংশটি আলাদা থাকার কারণ হচ্ছে এর মাঝখান দিয়ে একটি পর্দা থাকে। আর সাদা অংশের মূল উপাদানের প্রায় ৯০ ভাগে পানি এবং ১০ ভাগের মধ্যেও রয়েছে প্রোটিন। এই প্রোটিন উপাদান গুলোতে অ্যালবুমিন ছাড়া রয়েছে মিউকো প্রোটিন এবং গ্লোবুলিন। আর অপরদিকে কুসুমে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চর্বি উপাদান, ভিটামিন এ, ডি, ই, কে ইত্যাদি।
যখন একটি ডিমকে গরম পানিতে উত্তপ্ত করা হয় তখন ডিমের ভেতরের রাসায়নিক উপাদান গুলোর মধ্যে পরিবর্তন দেখা দেয়। সবচাইতে বেশি পরিবর্তন ঘটে প্রোটিন গুলোতে। কারণ কঠিন এ রয়েছে বিশেষ ধরনের অ্যামাইনো এসিড। আর এই অনেক গুলো অ্যামাইনো এসিড সেগুলোর মত একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে বড় একটি কঠিন গঠন করে। এটি সাধারণত গ্লোবুলার আকৃতির হয়।
যখন ডিমের তাপ প্রদান করা হয় তখন এই প্রোটিন গুলোর বন্ধন প্রথমে খুলে যায় তারপরে একটি প্রোটিন অপর একটি প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করে এবং আরো জটিল প্যাচ তৈরি করে। গরম করার পর এটা যখন ঠান্ডা হয় তখন এই বন্ধন গুলো আরো বেশি শক্তিশালী হয় যার কারণে ডিম সিদ্ধ করলে শক্ত হয়ে যায়।