ফুটপাতে চা বিক্রি করে মাসে কত টাকা আয় করা যায়

জীবিকার তাগিদে চাকুরী বা বিজনেস অনেক কিছুই আমরা করে থাকি। বাহ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাধারণ মনে হলেও ফুটপাতে চা বিক্রি করে মাসে কত টাকা আয় করা যায় সেটি জানলে নিশ্চিত চমকে যাবেন। বাংলাদেশের শহর, মফস্বল, গ্রাম সকল এলাকাতেই চা-পানের দোকান দেখা যায়।

কিছুদিন আগে এমএ পাশ চা ওয়ালা নামে এক ব্যক্তির দোকান সারা দেশ জুড়ে ভাইরাল হয়েছে। এমনকি ভারতের এক চা বিক্রেতা এখন তো সারা বিশ্ব জুড়ে বেশ বিখ্যাত। microsoft এর প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটসও তার চায়ের কাপের অতিথি হয়েছিলেন। বড় বড় অনুষ্ঠানে তিনি এখন মোটা অংকের অর্থ নিয়ে অতিথি হয়ে যান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানুষদেরকে নানা ধরনের ভঙ্গিমায় চা খাওয়ান তিনি।

যাইহোক এখন আসি মূল কথায়। দেশের বাজারে প্রতি কাপ চা বিক্রি হয় ৫ টাকা করে। তবে খাঁটি গরুর দুধের চা কোন কোন স্থানে ১০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা যায়। তাছাড়াও লেবু চা, তেতুল চা, মালটা চা ইত্যাদিও পাওয়া যায়। যেসবের দাম ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা কাপ হয়ে থাকে। এখন সাধারণ হিসাবে আসি। শহরের কিংবা বাজারের কোলাহলপূর্ণ জায়গায় প্রতি দিন যদি ৫০০ কাপ করে চা বিক্রি হয় তাহলে দৈনিক বিক্রির পরিমাণ প্রায় ২৫০০ টাকা। বিভিন্ন দোকানদারের সাথে কথা বলে এটা জানতে পেরেছে যে বিক্রির প্রায় অর্ধেকের বেশি টাকা লভ্যাংশ থাকে। সে হিসেবে দৈনিক যদি ১৫০০ টাকা লাভ থাকে তাহলে মাসে ৪৫ হাজার টাকা।

যা কিনা বর্তমান যুগে একটি পরিবারের সচ্ছলভাবে চলার জন্য যথেষ্ট।

ফুটপাতে চা বিক্রি করে কত টাকা আয় করা সম্ভব

আবার শহরের অনেক এলাকা আছে যেখানে কিনা দৈনিক হাজার কাপের বেশি চা বিক্রি হয়। বিভিন্ন উৎসব কিংবা ছোট দিনে বিক্রির পরিমাণ আরো বেশি থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিমাসে খরচ বাদে আপনি প্রায় লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি। ফুটপাতে চা বিক্রি করে আয় করা এই সকল লোকজনের জানিয়েছেন সাধারণত সকল ৯ টা থেকে রাত ১০ টা – ১১ টা পর্যন্ত চা বিক্রি করা যায়। নিউ মার্কেটসহ আশেপাশের এলাকায় প্রতি কাপ দুধ চায়ের মূল্য ১০ টাকা করে। এমনকি দৈনিক গড়ে প্রায় ১ হাজার কাপ চা বিক্রি করে। এখন আপনি হিসাব মিলিয়ে নিন এদের মাসে কত টাকা উপার্জন থাকতে পারে।

পৃথিবীতে কোন পেশাই ছোট নয় যদি কিনা সেটা হালাল উপায়ে হয়। একজন মধ্যমানের চাকরিজীবী সাধারণত বর্তমান বাজারে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকে। আর শহরে ভালো অবস্থানে একজন চায়ের দোকানদারও প্রায় ১ মাসে লাখ টাকা উপার্জন করে থাকে। হয়তোবা পেশাগত কিংবা সামাজিক মর্যাদা ইত্যাদি দিক থেকে এদের মধ্যে দেশ ব্যবধান রয়েছে তবুও দিনশেষে উভয়েই আর্থিক সচ্ছলভাবে জীবন যাপন করে।

শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট দোকানই নয় বরং বিভিন্ন পরীক্ষা অনুষ্ঠানেও ভ্রাম্যমান চা বিক্রেতাকে দেখা যায়। এদের মধ্যে বেশির ভাগ্যে তরুণ। আবার অনেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়তি অর্থ উপার্জনের জন্যও এই ধরনের পেশা বেছে নেয়।

বর্তমানে তরুন তরুনীরা ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায় করতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। আমরা ফেসবুক ইউটিউবে এর নমুনা ইতিমধ্যে দেখেছি। ফুটপাতে চা বিক্রি করে মাসে কত টাকা আয় করা যায় সেটা নিশ্চয়ই আপনারা এখন বুঝতে পেরেছেন।

Leave a Comment