মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অর্থ উপার্জন করা। সংসার চালানো, পরিবারের চাহিদা পূরণ, চিকিৎসা ইত্যাদি পূরণের জন্য আমাদেরকে প্রতিনিয়তই অর্থের পেছনে ছুটতে হয়। কিন্তু বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার উপায় অনেকেই রয়েছে। আপনি যদি মনে করেন বাসার বাইরে গিয়ে কাজ করা পছন্দ করেন না তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্য। তাই মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং খুঁজে নিন আপনার সেরা একটি উপায়।
অনলাইনে পণ্য বিক্রি
সারা পৃথিবী জুড়েই অন্যতম জনপ্রিয় একটি পেশা হচ্ছে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করা। এই পেশার বেশ কিছু সুবিধা হয়েছে। মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করা যায়।
পাশাপাশি বাড়তি কোন ঝামেলা নেই। আপনি যদি কোন একটি দোকান দিতে চান তাহলে ঘর ভাড়া নেওয়া, ডেকোরেশন করা, বিদ্যুতের লাইন ইত্যাদি সম্পূর্ণ করতে হবে। কিন্তু অনলাইনে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট এবং যথাযথ উৎপন্ন হলেই করা যায়।
আর বর্তমান যুগে কুরিয়ার সুবিধা, ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ডেলিভারি নিয়েও তেমন ঝামেলা নেই। ক্যাশন ডেলিভারি ছাড়াও এডভান্স বুকিং এর অর্থ গ্রহণ করা যায় বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে। তাই ghore boshe taka income হয়েছে সহজ
ঘরে বসে টাকা ইনকামের উপায় হিসেবে ইউটিউব এবং ফেইসবুক
আপনার নিশ্চয়ই জানার বাকি নেই জনপ্রিয় এই ডিজিটাল প্লাটফর্ম ২ টি হতে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায়। উভয় প্লাটফর্ম হতে অর্থ উপার্জনের পদ্ধতি মোটামুটি একই রকমের।
এর জন্য অবশ্যই আপনার একটি পেইজ অথবা চ্যানেল থাকতে হবে। তারপর সেখানে মানসম্মত কন্টেন্ট আপলোড করবেন। দর্শকরা যদি আপনার তৈরি করা ভিডিও কনটেন্ট গুলি পছন্দ করে তাহলে আপনি সেখান থেকে মনিটাইজেশন প্রোগ্রাম চালু করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন প্রচুর টাকা।
এই প্লাটফর্ম গুলির সুবিধা হচ্ছে আপনাকে কোন অর্থ খরচ করতে হবে না। শুধুমাত্র টেকনিক্যাল জ্ঞান এবং কনটেন্ট তৈরি দক্ষতা থাকতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং করা
এটা নিয়েও আপনাদেরকে হয়তো বা বেশি বোঝাতে হবে না। আপনি হয়তো ইতিমধ্যেও ফ্রিল্যান্সিং কিংবা আউটসোর্সিং করে অর্থ উপার্জনের ব্যাপারে শুনেছেন।
এটিও মূলত এক ধরনের চাকরি। তবে এর সুবিধা হচ্ছে আপনি নিজের বাসায় চেয়ার টেবিলে বসে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার ক্লায়েন্টদের কাজ করতে পারবেন। তবে এ চাকরি করার জন্য আপনাকে অবশ্যই বিশেষ কোনো ফিল্ডে দক্ষ হতে হবে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর নিচে উল্লেখ করা হলো।
১। ডিজিটাল মার্কেটিং
২। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
৩। কনটেন্ট ক্রিয়েট
৪। গ্রাফিক্স ডিজাইন
৫। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
৬। অ্যান্ড্রয়েড এবং ios অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
৭। অনুবাদের কাজ
৮। প্রোডাক্ট ডিজাইনের কাজ
উপরের উল্লেখিত ফিল্ড ছাড়াও আরো অনেক কাজের সেক্টর রয়েছে।
অনলাইনে স্টুডেন্ট পড়ানো
করোনাকালীন সময় থেকে আমরা দেখেছি কিভাবে অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা যায়। বর্তমানে এটি ঘরে বসে টাকা ইনকামের উপায় হিসেবে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ এমন কিছু সফটওয়্যার আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্টুডেন্ট পড়াতে পারবেন। পেমেন্ট নিয়েও কোন ঝামেলা নেই।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করুন
শুরুতেই এই সেক্টর সম্পর্কে কিছু বলে নেই। ধরুন বড় একটি কোম্পানি যারা নির্দিষ্ট একটি পণ্য উৎপাদন করে। তাদের পণ্য বিক্রয়ের জন্য অবশ্যই মার্কেটিং কিংবা অন্যান্য পদক্ষেপ গুলি গ্রহণ করবে। এখন আপনি তাদের সাথে এমন একটা চুক্তি করলেন যেটির মাধ্যমে তাদের পণ্য বিক্রি বিনিময়ে আপনাকে কিছু কমিশন প্রদান করা হবে।
তারপর সেই চুক্তির ভিত্তিতে বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে পণ্য বিক্রয় শুরু করলেন। বিনিময়ে প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য আপনিও পেলেন ভালো কমিশন। এ ধরনের পদ্ধতিতে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার উপায় কি বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এজন্য অবশ্য বিভিন্ন ডিজিটাল এবং সোশ্যাল মিডিয়া পারফর্ম সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন
যখন থেকে তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লব শুরু হয়েছে তখন থেকেই বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে চাহিদা। একটি জরিপ অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে যত মানুষ রয়েছে তার চাইতে দশ গুণ বেশি রয়েছে ওয়েবসাইটের সংখ্যা। আর প্রতিনিয়ত এর চাহিদা বাড়তে চলেছে।
আপনি প্রথমে সুন্দর একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন। আগে আপনার লেখালেখির অভ্যাস আছে কিনা সেটি সম্পর্কে ঝালাই করে নিন। ওয়েবসাইট চালাতে গেলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে কন্টেন্ট প্রয়োজন হবে। বিভিন্ন প্রোডাক্টের রিভিউ, টিপস, শিক্ষা বিষয়ক, ভ্রমণ ইত্যাদি যেকোনো ধরনের কনটেন্ট হতে পারে।
তারপর নিয়মিত আপনার ওয়েবসাইটে লিখাগুলি গুলো প্রকাশ করতে থাকুন। এর মাধ্যমে আপনি একটু সময় গুগল এডসেন্সের এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন। আর তারপর থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করার মাধ্যমে আপনিও ঘরে বসে ইনকাম করতে পারেন অনেক টাকা।
বিভিন্ন ধরনের চাকরি করে
প্রতিটি অফিস আদালতে ব্যাপক হারে কম্পিউটার এবং এ সংক্রান্ত কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। ছোট ছোট কিছু কাজ করার জন্য অনেক সময় বেশি বেতন দিয়ে কর্মচারী রাখা সম্ভব হয় না। তাই অনেক প্রতিষ্ঠান এ সকল ডিজিটাল কাজ গুলো সম্পন্ন করার জন্য অনলাইনে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করে থাকে।
তোমার বাসায় যদি ভালো একটি কম্পিউটার, মোবাইল এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকে তাহলে ghore bose taka income করার উপায় হিসেবে এই ধরনের চাকরি করতে পারেন। তবে আপনার তো কিছুটা কিছু দক্ষতা থাকতেই হবে। কম্পিউটারের অফিস ওয়ার্ড সম্পর্কে ভালো ধারণা, ভালো ডিজাইন সম্পর্কে জানা, ইন্টারনেট ইমেইল ব্যবহারের দক্ষতা ইত্যাদি থাকলে আপনি করতে পারেন অনলাইন জব।
হয়ে যান একজন ইনফ্লুয়েন্সার
এই শব্দটি অল্প কিছুদিন আগেও খুব একটি পরিচিত ছিল না জনসাধারণের মাঝে। বর্তমানে আমরা এটার সাথে ভালোভাবেই পরিচিত হয়েছে। ইনফ্লুয়েন্সার হচ্ছে এমন এক ধরনের ব্যক্তি যিনি কিনা বিভিন্ন সামাজিক আন্তর্জাতিক অথবা নানা ধরনের টপিক্সের উপর আলোচনা করে থাকেন। এমনকি বিভিন্ন ধরনের মানব সেবামূলক কাজও করে থাকেন।
এই ধরনের মানুষ গুলো সাধারণত বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর কিংবা বিজ্ঞাপন করে ভালো অর্থ উপার্জন করে থাকে। ghore bose taka income এর এটিও ভালো একটি উপায়। তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই জনসাধারণের মধ্যে বেশ পরিচিতি লাভ করতে হতে হবে।
Virtual Assistant এর চাকরি
ভার্চুয়াল শব্দটির সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন। অর্থাৎ যে দুনিয়াকে স্পর্শ করা যায় কিংবা ধরা যায় না।। এই দুনিয়া মূলত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোর ক্ষেত্রে বোঝানো হয়। অনেক বড় বড় ব্যক্তিত্ব কিংবা সেলিব্রিটি আছেন যারা নিজেদের এই অ্যাকাউন্ট গুলো সামান্য সময় পান না। তাই নিজের হয়ে টুইটার, ফেসবুক ইত্যাদি অ্যাকাউন্ট গুলোতে পোস্ট করবেন কিংবা সেগুলো মেইনটেইন করবেন এমন লোক নিয়োগ প্রদান করেন। এ চাকরি গুলোকে বলা হয় ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট। আপনার যদি এই ধরনের ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি সম্বন্ধে ভালো ধারণা থাকে তাহলে অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখতে পারে। সেখান থেকে আবেদন করলে হয়ে যেতে পারে আপনার ইনকামের একটি রাস্তা।
ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার উপায় হিসেবে ই-কমার্স বিজনেস
বর্তমানে চারিদিকে ই কমার্স ওয়েবসাইট গুলোর জয়জয়কার চলছে। যদিও এর জন্য আপনাকে বাইরে কিছুটা ভ্রমণ করতে হবে তবুও বেশিরভাগ কাজে ঘরে বসে করতে পারবেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা ধরনের পণ্য গুলির সংগ্রহ করে লিস্টিং করে সেগুলো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজে বিক্রি করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে যে বড় টাকা ইনভেস্ট করে এবং বড় পরিসরে শুরু করতে হবে বিষয়টি তা নয়। শুধুমাত্র একটি সুন্দর ওয়েবসাইট এবং কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট থাকলে আপনি এটি করতে পারবেন।
ছবি তুলে টাকা ইনকাম করা
এজন্য আপনাকে তো অবশ্যই বাহিরে যেতে হবে। তবুও কারো অধীনে থেকে চাকরি করতে হবে না। আপনি যখন খুশি ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন এবং আশেপাশের সুন্দর দৃশ্য গুলির সেটিদের ধারণ করবেন। বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এবং এর সংক্রান্ত বিষয় গুলি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্যাপক হারে ছবির চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে ভালো মানের ছবি বেশ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
এর জন্য আপনার প্রয়োজন একটি ভালো ক্যামেরা এবং ছবি এডিট করার জন্য ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার। ছবি গুলো বিক্রি করতে পারেন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইত্যাদি সেক্টরে।
বই লিখে টাকা আয়
যদিও এই পেশাটি নিয়ে বর্তমানে এখন খুব কম লোকই ভাবেন। তবুও আধুনিক যুগের অনেক মানুষের মাঝেই লেখালেখির মতো মেধা এবং প্রতিভা রয়েছে। সম্পূর্ণভাবে বই পাবলিশ না করতে পারলেও অনলাইনে বিভিন্ন প্লাটফর্মে নিজের লেখাগুলো প্রকাশ করে অর্থ উপার্জন করা যায় ঘরে বসে।
অথবা ই বুক আকারে বিক্রি করা যায়। তাই আর দেরি না করে আজই শুরু করে দিতে পারেন।
পৃথিবীতে কোন কাজই সহজ নয়। অর্থ উপার্জনের জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য। তবে উপরের তো ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো যদি আপনি ভালোভাবে এনালাইসিস করেন তাহলে কোন না কোন একটি টপিক্স আপনার অবশ্যই পছন্দ হবে। তারপর সঠিক পরিকল্পনা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এগিয়ে গেলে একসময় সফলতা অর্জন করতে পারবেন। এ ধরনের আরো প্রয়োজনীয় টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য লিখা গুলি ভিজিট করুন।