৩০ বছর বয়সেই নারী সানজিদা আক্তার এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দেশের প্রথম HMP (Human Metapneumovirus) ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া নারী। বিষয়টি নিষেধ করেছেন উক্ত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার।
বাংলাদেশে এই ভাইরাসটি তেমন গুরুতর আকার ধারণা করলেও পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি দেশে এটি নিয়ে বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এমনকি খুবই উদ্যোগ জনক ভাবে এর তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো তথ্য প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে যে সকল শিশুদের বয়স ১৪ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের অধিক বয়সীদের মধ্য এটি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। এমনকি যারা গর্ভাবস্থায় আছেন, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে উচ্চ মাত্রার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এইচএমপিভি ভাইরাস। যার কারণে সকলকে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য আহবান করা হয়েছে।
আমরা ইতিমধ্যে করোনা মহামারীর একটি সময় পার করে এসেছি। যদিও সেই ধরনের ভয়াবহতা আর নেই তবুও এই নতুন ভাইরাসটি বেশ শংকা তৈরি করেছে। এমনকি ইতিমধ্যে খুব দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। সবচাইতে বেশি কথা রয়েছে চীন এবং জাপান দেশটিতে। এমনকি মালয়েশিয়া এবং ভারতেও এটা ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। অনেকটাই ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের ভাইরাসের মতো এটিও গুরুত্ব সহকারে দেখছেন সবাই। সর্বপ্রথম নেদারল্যান্ডে এটি প্রায় দেখা গিয়েছিল ২৫ বছর আগে।
মহামারি তালিকায় বর্তমানে ১১ টি রোগের মধ্যেও রয়েছে হাম, কলেরা ব্লার্ড ফ্লু ও স্ক্যাবিসের মত অন্যান্য রোগ গুলি। তবে বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকদের চিন্তার হচ্ছে যে এটিও হয়তোবা তালিকায় নতুন করে যুক্ত হতে পারে।
এইচএমপিভি ভাইরাসের লক্ষণ গুলো কি কি
এটি অনেকটা ফ্লু এবং শ্বাসজনিত অন্যন্য ভাইরাসের মতই। প্রাথমিক অবস্থায় নাক বন্ধ হওয়া, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, কাশি এবং জ্বর আসে। তারপর সংক্রমণের তীব্রতার উপর ভিত্তি করে আরও বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। তবে যে কোন সময় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এবং ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া কিংবা ইনফেকশনও দেখাইতে পারে।
কিভাবে এই ভাইরাসটি ছড়ায়
অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসের মতো এটিও হাত মেলানো, স্পর্শ করা, হাঁচি, কাশি, সংক্রমণ স্থানে স্পর্শ করলে ছড়াতে পারে। চিকিৎসকদের মধ্যে এটির বর্তমানে কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিকভাবে মেনে চললে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এর থেকে দূরে থাকা যাবে। আর যদি কারো মধ্য এইচএমভি ভাইরাসের লক্ষণ গুলো দেখা যায় তাহলে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, খাবার স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সাথে ঝাড়, ফুক কিংবা কবিরাজের কাছে না গিয়ে যত দ্রুত সম্ভব অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন তারা।