সারা দেশ জুড়ে শীতের তীব্রতা নেমে গিয়েছে। ইতিমধ্য গরমের আভাসও বেশ পরিলক্ষিত হয়েছে। বিগত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা মাঝারি থেকে ভারী আকারের বৃষ্টি বর্ষণ হয়েছে। যারা আগামী দিনের বৃষ্টির খবর সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য আরও একটি সংবাদ রয়েছে। আবহাওয়ার খবরে বলা হয়েছে যে আগামী শনি ও রবিবার কালবৈশাখী ঝড় আসতে পারে।
২০ মার্চ বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডির মাধ্যমে এই তথ্য শেয়ার করেছেন। এমনকি ওই পোষ্টের মাধ্যমে তিনি সংবাদ মিডিয়াকর্মী এবং বাংলাদেশ সরকারের কৃষি উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কারণ শনি ও রবিবারের কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে সাথে তীব্র বজ্রপাত এবং শিলাবৃষ্টিরও প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য যাতে ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখীন না হয় তার জন্য পূর্বে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এমনকি জনজীবনও এর কারণে বেশ বিপর্যস্ত হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেছেন। বর্তমানে আলু সহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফলের উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন এলাকার আলু সংরক্ষণের যে হিমাগর রয়েছে তা নিয়ে বেশ সমস্যা রয়েছে। এ সকল আলু ভর্তি ট্রাক যদি কালবৈশাখী ঝড়ের বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায় তাহলে পুরোপুরি সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই আগামীদিনের বৃষ্টি এবং কালবৈশাখী ঝড়ের উপস্থিতি উপলক্ষে তিনি এগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
কালবৈশাখীর ঝড়ের পূর্ব প্রস্তুতি মূলক ব্যবস্থা
আমরা এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস আগে থেকেই পেয়ে থাকি। বর্তমানে ইন্টারনেট, মিডিয়া, মোবাইল সবার ঘরে থাকার কারণে আমরা জানতে পারি কবে এই ধরনের দুর্যোগ কখন হতে পারে। তাই আমাদেরকে আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাখা উচিত।
যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঘরে খাবার স্যালাইন প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম, শুকনো খাবার, অন্ধকারে ব্যবহারের জন্য চার্জার লাইট ইত্যাদির ব্যবস্থা করা। এমনকি যারা কিনা দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় বসবাস করেন তারা সবকিছু যথাসম্ভব গুছিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা দূরের কোন আত্মীয়ের বাসায় যেতে পারেন। এতে করে মানুষের হতাহত সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
সেই সাথে আশেপাশের এলাকার যারা এই সম্পর্কে অবগত নয় তাদেরকেও আগে থেকে জানানো খুবই জরুরী। এতে করে যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আরও সহজ হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গ্রীষ্মকালে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রচন্ড ঝড়ের একেই বলা হয় কালবৈশাখী। আবহাওয়া কত একটি ঘটনা। বাংলা সন অনুযায়ী এটি বৈশাখ মাসের সবচাইতে বেশি ঘটে থাকে বলে একে বলা হয় কাল বৈশাখী। এই সময় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার অধিক বেগে বইতে পারে এ ঝড়ের কারণে।
এই ধরনের ঝড় সৃষ্টি হয় ভূপৃষ্ঠের বাতাস অত্যাধিক গরম ও হালকা হয়ে উপরে উঠে গেলে। অন্যান্য অসাধারণ জরের সাথে এই ঝড়ের পার্থক্য হচ্ছে বজ্রপাতের। যেখানে অন্য ঝরে বাতাস থাকে এবং বৃষ্টি হয় সেখানে কালবৈশাখী ঝড়ের ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ চমকায় এবং বজ্রপাত ঘটে। সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের পরেই এ ধরনের ঝড়ের তীব্রতা হ্রাস পেতে থাকে। এমনকি কালবৈশাখী ঝড়ে ফসলের ব্যাপক হয় ক্ষতি হয়।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বিহার, উড়িষ্যা, ত্রিপুরা, আসাম এবং পশ্চিম বঙ্গেও এর বেশ প্রভাব রয়েছে।