বর্তমানে সারা পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষ কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ গুলো আগে থেকে ভালো ভাবে শনাক্ত করা যায় না। যার কারণে যখন রোগ ধরা পড়ে ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়।
আর পাথরের আকার যদি খুব বেশি বড় না হয় তাহলে কোন ধরনের লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে। আর লক্ষণ যেগুলো ভালোভাবে জানা থাকলেই এই অসুখ নিয়ে আগেভাগেই সচেতন হওয়া যায়। তাই আপনার ও পরিবারের সুস্থতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ সম্পর্কে জেনে নিন।
পিঠ ও পাঁজরের দুই পাশে ব্যথা
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পিঠ এবং পাঁজরের দুই পাশে তীব্র ব্যথা করবে। যদি এই ব্যথার পরিমাণ খুবই অল্প হয় তবুও এটিকে অবহেলা করবেন না। চেষ্টা করুন সাথে সাথে কোন কিডনি বিশেষজ্ঞ কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য। মোটকথা আসলে অভ্যন্তরে কোন ধরনের ব্যথাকে এই অবহেলা করা উচিত নয়।
তলপেটে ব্যথা
তলপেটে যদি ব্যথা হয় সেটিও কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। গ্যাস কিংবা অন্য কোন কারণে সামান্য ব্যথা করতে পারে। কিন্তু যে যদি এটি থামার কোন লক্ষণ না থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের স্বর্ণপাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিন।
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া করা
কিডনিতে পাথর হলে অবশ্যই প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করে থাকে। এমনকি প্রস্রাব শেষ হওয়ার পরেও এ জ্বালাপোড়া অব্যাহত থাকে। সেই সাথে অতিরিক্ত পরিমাণ প্রস্রাবের দুর্গন্ধ এবং মাঝে মাঝে রক্ত দেখা দিতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ গুলি অবশ্যই কোন মারাত্মক রোগের হয়ে থাকে।
ক্লান্তি অনুভব হওয়া ও বমি বমি লাগা
যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়ার পর অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা কিংবা বমি বমি লাগাও কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই এই ধরনের খাবারকে ফুড পয়জনিং বা হজমের সমস্যার কারণে হয় বলে মনে করে থাকেন। কিন্তু এটি যে কোন গুরুতর রোগের পূর্ব লক্ষণ এসব হতে পারে।
ঘন ঘন জ্বর আসা
কিছুদিন পর পর জ্বর আসাও কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ। জ্বর মানে সেটা এমনিতে হয়েছে বা ঠান্ডা লাগার কারণে হয়েছে এই ধরনের বিষয় গুলি ভাবার কোন অবকাশ নেই। বর্তমানে মানুষ সাধারণ যদি অনেক বেশি ভুক্তভোগী হয়ে থাকে।
কিডনিতে পাথর কেন হয়
এটি নানা কারণে হতে পারে। নিম্নে কিছু কারণ উল্লেখ করা হলো।
• শরীরের অতিরিক্ত ওজনের কারণে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
• সেই সাথে প্রতিদিন অপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ার কারণেও কি নিতে পাথর জমতে পারে।
• বিভিন্ন ধরনের অক্সালেট সমৃদ্ধ কিংবা সোডিয়াম জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করলে কিংবা তরল জাতীয় খাবার কোন গ্রহণ করলেও আমাদেরকে নিতে পাথর ঝরতে পারে।
আবার অনেকেই পারিবারিক ইতিহাস আছে এই ধরনের রোগের। তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন কিছুদিন পর পর পরীক্ষা করে দেখার জন্য। আবার যারা ওজন কমানোর জন্য সার্জারি করে থাকে তাদেরকে পরবর্তীতে সাইড ইফেক্ট হিসেবে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিডনি ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। আবার পানির পরিমাণ বেশি হওয়া যাবে না।
যেকোনো সমস্যায় পড়ে সেটার সমাধান করা চাইতে আগে থেকেই প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সবচাইতে ভালো। জীবন ধারায় পরিবর্তন সুস্থ এবং পুষ্টিকর খাদ্য অভ্যাস নিয়মিত ব্যায়াম তাদের মাধ্যমে আমরা এই ধরনের রোগ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারি। আর যদি কোন কারণে সমস্যা তৈরি হয়ে যায় তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা নিয়মিত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করুন।
আপনি যদি শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে থাকেন কিংবা কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ গুলো না থাকে তবুও কিছুদিন পরপর সাধারণ টেস্ট গুলি করা উচিত।। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কিডনি টেস্ট, হার্টের টেস্ট, ডায়াবেটিস টেস্ট, ব্লাড টেস্ট ইত্যাদি। কারণ সবসময়ই যে সব অসুখের লক্ষণ গুলি স্পষ্ট ভাবে আপনার শরীরে দেখা দেবে বিষয়টি এরকম নয়। তাই আপনার ও পরিবারের জন্য এই ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো করার জন্য বাৎসরিক একটি বাজেট ও সময় নির্ধারণ করে রাখুন।