কোন নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়

মহান আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের জন্য মুসলমানদের দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু কোন নামাজ কত রাকাত করতে হয় সেটি জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। সেই সাথে প্রতিটি সালাত নির্ধারিত সময়ে আদায় করাও জরুরী। আমাদের জন্য নির্ধারিত এই ফরজ সালাত গুলি আদায় না করলে সেটি মহান আল্লাহ তায়ালার আদেশের লঙ্ঘন হবে। যদি কোন প্রয়োজনে কিংবা সমস্যায় সালাত ছুটে যায় তাহলে পরবর্তীতে অবশ্যই কাজা করতে হবে এবং তওবাও করতে হবে।

মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্য ফরজ রয়েছে ১৭ রাকাত, সুন্নতে মুয়াক্কাদা রয়েছে ১২ রাকাত, এছাড়াও রয়েছে সুন্নতের জায়েদা। সেই সাথে আমরা নফল নামাজ পড়তে পারি।

কোন নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়

ফজরের নামাজ

আমাদের দিন তথা সকল শুরু হয় ফজরের ওয়াক্ত দিয়ে। এই ওয়াক্তে ফরজ করতে হয় ২ রাকাত এবং সুন্নতে মুয়াক্কাদা পড়তে হয় ২ রাকাত। ফরজ নামাজের পূর্বে সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ পড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কোনভাবেই এই নামাজ ত্যাগ করা উচিত নয়। সকালে আরামের ঘুম নষ্ট করে মহান আল্লাহ তায়ালার এবাদত করার মধ্য দিয়ে বিশেষ ফজিলত রয়েছে ফজরের নামাজে।

দুপুর – জোহরের নামাজ

এটি সর্বমোট ১২ রাকাত। প্রথমে সুন্নতে মুয়াক্কাদা পড়তে হয় ৪ রাকাত এরপর ফরজ পড়তে হয় ৪ রাকাত এবং সর্বশেষ ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা করে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। শুধুমাত্র শুক্রবারে জুম্মার নামাজে কিছু ব্যতিক্রম হয়েছে। সেটিও আমি নিচে আলোচনা করব।

আছরের নামাজ

প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নতের জায়গা আদায় করার পরে আছরের ফরজ নামাজ হচ্ছে ৪ রাকাত। তবে ফরজ নামাজ আদায়ের শেষে অন্য কোন নামাজ পড়া মাত্র। এটি শুধুমাত্র আছরের ওয়াক্তের ক্ষেত্রে।

মাগরিবের নামাজ

দিনশেষে যখন সন্ধানেমে আসে তখন আমরা মাগরিবের ৩ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করে থাকে। এরপরে সুন্নতে মুয়াক্কাদা আদায় করেই ২ রাকাত। এরপরে অনেকেই আবার ২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করে থাকেন। এভাবে সর্বমোট ৭ রাকাত পড়া হয়।

এশার নামাজ

কোন নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়? এই পর্যায়ে আমি এখন আলোচনা করব রাতের অর্থাৎ এশার নামাজ নিয়ে। বিভিন্ন আলেমগণের মতে এশার সালাত ১৫ রাকাত আবার কারো কারো মতে এটি ১৭ রাকাত।

এশার সালাতের শুরুতেই চার রাকাত সুন্নতে জায়েদা পড়তে হয়, তারপর আদায় করতে হয় চার রাকাত ফরজ। এশার খরচ সালাতের শেষে আবার আদায় করতে হয় সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২ রাকাত। সুন্নতে মুয়াক্কাদা শেষে কেউ কেউ ২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করে থাকেন। তবে সর্বশেষ বিতির নামাজ হচ্ছে ৩ রাকাত। এটি ওয়াজিব অর্থাৎ অবশ্যই পড়তে হবে।

তবে এশার সালাতের পর করে যে ভিতরে আদায় করতে হবে এ বিষয়টি এরকম নয়। এটি ফজরের নামাজের আগে মুহূর্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় আদায় করা যায়। আবার কেউ যদি নিয়ত করে থাকেন তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করবেন তাহলে এশার পর বিতের নামাজ আদায় করা যাবে না। এ সকল হিসেব মতে এশার নামাজ কেউ কেউ ১৭ আবার কেউ কেউ ১৫ রাকাত আদায় করে থাকেন।

তবে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সাথে আমাদেরকে অবশ্যই সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ আদায় করার জন্য যথাযথ সচেষ্ট হতে হবে। তবে কেউ যদি অসুস্থ থাকেন অথবা সফরত অবস্থায় থাকেন সে ক্ষেত্রে এটি আদায় না করলেও চলবে। ফরজ নামাজ ছুটে গেলে কাজে আদায় করা যায় কিন্তু সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে গেলে সেটি কাজে আদায় করার সুযোগ নাই।

জুমার নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়

কোন নামাজ কত রাকাত পড়তে হয় তার নিয়ম ইতিমধ্য আপনারা জেনে গিয়েছেন। এবার আলোচনা করব শুক্রবারে জুমার নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে। ইসলামী শরীয়তের বিধান মতে শুক্রবারের জুম্মা পড়তে হয় দুই রাকাত ফরজ। এ নিয়ে কোন মতভেদ নেই বরং সমগ্র মুসলমান জাতি এই নিয়ম অনুসরণ করে থাকে। এর আগে ওপরে চার রাকাত সুন্নত রয়েছে। সব মিলিয়ে হয় ১০ রাকাত। মূলত শুক্রবারে যোহরের ফরজ নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ পড়তে হয়।

সাধারণত সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকল মুসলমানরা মসজিদে একত্রিত হয়ে এই নামাজ আদায় করে তার জন্য এটিকে জুমার নামাজ বলা হয়ে থাকে। এর ফরজের আগের চার রাকাত কে বলা হয় কাবলাল জুমা এবং পরের চার রাকাতকে বলা হয় বাদাল জুমা। ফরজ নামাজের পূর্বে ইমাম সাহেব খুতবা প্রদান করেন। কিন্তু জোহর নামাজের পূর্বে কোন খুতবা দেওয়া হয় না। যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া এই নামাজ ত্যাগ করা যাবে না।

মহান আল্লাহ তায়ালার এবাদত করার জন্য কোন নামাজ কত রাকাত পড়তে হয় সেটি আমাদেরকে অবশ্যই যথাযথভাবে জেনে থাকতে হবে। কারণ আমরা যদি সালাতের রাকাত নিয়ম নিয়ত ইত্যাদি না জেনে থাকে তাহলে সঠিকভাবে ইবাদত করতে পারবো না। এমনকি বিভিন্ন দোয়া এবং সূরা গুলো মাঝে মাঝে যাচাই করে নেওয়া জরুরি। যাতে করে কোন ভুল থাকলে সেগুলো সংশোধন হয়ে যায়।

Leave a Comment