ইতিমধ্য শুরু হয়ে গিয়েছে হাড় কাপানো শীত। আর এই শীতের দিনে প্রকৃতির অসাধারণ একটি দৃশ্য হচ্ছে ঘন কুয়াশা। সাধারণত মাঝরাত থেকে এই কুয়াশা পড়া শুরু হয় এবং থাকে সকাল অথবা সারাদিন। আর যখন রোদ পড়ে না তখন তো সারাদিনই চারিদিকে সাদা কুয়াশা দেখতে পাওয়া যায়।
কুয়াশা কিভাবে তৈরি হয়
এটি কে ইংরেজিতে বলা হয় লো ক্লাউড। আমরা জানি শীতের দিনে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। যার কারণে মাটিতে কিংবা পুকুরে থাকা আদ্রতা হালকা হয়ে উপরে উঠে গিয়ে তৈরি করে কুয়াশা।
আর যেহেতু বাতাসের তুলনায় এই পানির বাষ্প বেশ হালকা তার কারণে খুব সহজেই ভেসে থাকতে পারে। আবহাওয়াবিদদের মতে কুয়াশা তৈরি হয় বাতাসের আদ্রতা এবং তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে। রাতে যদি তাপমাত্রা অনেক বেশি পরিমাণে কম থাকে তাহলে ঘন কুয়াশা তৈরি হতে পারে। আবার বাতাসের কারণে কুয়াশা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হতে পারে।
কুয়াশা কিভাবে তৈরি হয় সেটি আপনি বরফের দিকে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন। এটি মূলত বরফেরই একটি অংশ। ফ্রিজ থেকে কিছু পরিমাণে বরফ বাইরে রেখে দিন। তারপরে দেখবেন সেখান থেকে আদ্র অথবা পানির একটি অংশ আস্তে আস্তে ধোঁয়ার মতো করে উপরে উঠে যাচ্ছে। শীতের দিনের ঠিক এরকমটাই ঘটে। যার কারণে গাছপালা সেখানে বেশি এবং পুকুর নদীর আশেপাশে কুয়াশার পরিমাণও বেশি থাকে। বাংলাদেশ সহ ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং চীনেও অনেক পরিমানে কুয়াশা তৈরি হয়। বাতাশের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে সেগুলো আমাদের দেশে প্রবেশ করে।
শীতের মৌসুমে কিভাবে কুয়াশা তৈরি হয়
বাতাসে থাকা জ্বলীয় বাষ্প যখন ঘনীভূত হয়ে হালকা হয় এবং মেঘের মতো তৈরি হয় তখন আর এটি উপরের দিকে উঠতে পারে না। অর্থাৎ ভেসে বেড়াতে পারে না। এই ধরনের জলীয় বাষ্প গুলি সাথে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির ধোয়া, ধূলাবালি ইত্যাদি যুক্ত হয়ে কোন সাদা পরিবেশ তৈরি করে। ঢাকা শহরের বাতাস দূষণ হওয়ায় এখানে এবং কলকারখানার ধোঁয়ার পরিমাণ বেশি থাকায় সাদা ঘন কুয়াশা তৈরি হয়ে থাকে।
যদি চারিদিকে ঘন কুয়াশা থাকে তাহলে সূর্যের আলো ভালোভাবে বাস ভূমিতে প্রবেশ করতে পারে না ফলে চারদিকের তাপমাত্রা কম থাকে। এমনকি গাছপালা সালোকসংশ্লেষণের প্রক্রিয়াও কমে যায়। আর আমরা জানি গাছপালা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ঠিকভাবে না হলে অক্সিজেন কমে যেতে পারে এবং শস্য উৎপাদনও ব্যাহত হতে পারে। আশা করি আপনারা কুয়াশা কিভাবে তৈরি হয় এবং এর প্রভাব সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।