সম্প্রতি মানহানি মামলায় জামিন পেয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি। তিনি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। মূলত তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। গত ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন।
উভয় পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষ করার পর ৫০০ টাকা মুচলেকা প্রদানের মাধ্যমে আদালত তার জামিন মনজুর করেন। মূলত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি। যার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে গণ পরিষদের সদস্য আবু হানিফ। তিনি গণমাধ্যমের সমন্বয়কও।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি জামিন পেলেন
ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মেহেদী হাসান পাটোয়ারী। উক্ত মানহানি মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের কে জানান, শুনানিতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশ সরকারের একটি দায়িত্বশীল ও গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শহীদের প্রতি কটু মন্তব্য করে তিনি বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। তাই তিনি জামিন পেতে পারেন না। এমনকি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার জন্যও আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু মহামান্য আদালত সেটা না মঞ্জুর করেছেন।
কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসুম ঊর্মি।। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মানুষের নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিও তিনি কটুক্তি করেন। যার প্রেক্ষিতে গত ৬ অক্টোবর তাকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় স্থানান্তর করা হয়। তারপরের দিন অর্থাৎ ৭ অক্টোবর তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি শুধুমাত্র শহীদ আবু সাঈদ নয় বরং সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদের থেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রতি অবমাননা করেছেন। মামলা দায়ের করার পর গত ২৮ শে নভেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট উর্মী আদালতে হাজির হন। তার প্রতি সমন জারি করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে জামিনের আবেদন করলে আদালত সেটি মঞ্জুর করে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উর্মির পরিচয়
তাপসী তাবাসসুম উর্মীর বাড়ি নেত্রকোনা পূর্বধলা সদর ইউনিয়নে। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। তিনিও একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী। তবে নেত্রকোনার পূর্বধলায় তার পরিবারের কেউ এখন বসবাস করেন না। তারা ময়মনসিংহে অনেকদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। তবে গ্রামের বাড়িতে মাঝেমধ্যে তারা বেড়াতে যান।
ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির প্রতিবেশী এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা জানান, তিনি মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। কম্পিউটার সাইন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে লেখাপড়া সম্পন্ন করেছেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। লেখাপড়া শেষ করে ২০২২ সালে যোগদান সরকারি চাকরিতে। আরো একটি বোন এবং ভাই রয়েছে। ছোট ভাই লেখাপড়া করছে জার্মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়।। ঊর্মির বাবা ময়মনসিংহের অন্যতম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আনন্দমোহন সরকারি কলেজে সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। এমনকি তার পরিবার এর আগে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিল বলেও জানা যায়নি।