আমরা মসজিদকে আল্লাহর ঘর বলে থাকি। ধর্ম প্রাণ মুসলিমরা পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায়ের পাশাপাশি আরো নামাজ আদায় করে থাকেন এই ঘরে। অনেকেই মসজিদের দান করার সওয়াব সম্পর্কে জানতে চান। কারণ সবাই চায় ইবাদতের পাশাপাশি দান করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করার।
আমাদের প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) মদিনায় হিজরতের সময় কুবা নামক স্থানে প্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে মসজিদে নববী প্রতিষ্ঠা করেন যখন তিনি মদিনায় পৌঁছান। মহান আল্লাহ তা’আলা মসজিদ নির্মাণ রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংরক্ষণ করাকে অনেক পছন্দ করেন। এ ব্যাপারে আয়তো রয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে যারা মহান আল্লাহ তাআলার মসজিদে আবাদ করবে যারা ঈমান আনে তার পাশাপাশি নামাজ কায়েম করে যাকাত দেয় তারা সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। উক্ত আয়াতে আরো উল্লেখ করা রয়েছে যে ঐ সকল ব্যক্তির এমন আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না।
আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে সবচাইতে প্রিয় জায়গা হচ্ছে মসজিদ এবং সবচাইতে নির্দিষ্ট জায়গা হচ্ছে বাজার। (মুসলিম হাদিস ১৪১৪)
উপরিক্ত হাদিস এবং আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারি যে মসজিদে দান করার সওয়াব কি এবং এটি কতটা ফজিলতপূর্ণ। অনেকেই বলে থাকেন এতে মহান আল্লাহতালা খুশি হন এবং সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের ঘর তৈরি করেন।
মসজিদে দান করলে কি সওয়াব পাওয়া যায়
এমনকি মসজিদের নির্মাণ দান করা এতটাই সওয়াবের কাজ যে মৃত্যুর পরেও সেই বান্দার আমলনামায় এর সওয়াব পৌঁছাতে থাকে। মসজিদে মানুষেরা যতদিন ইবাদত করবে ততদিন নির্মাণকারী ও নির্মাণের সাহায্যকারী ব্যক্তিদের কবরে এই সওয়াব জেতে থাকবে। আপনি এবার নিশ্চয়ই আগ্রহী হচ্ছেন যে কোন ধরনের কাজ দ্বারা মৃত্যুর পরেও এই সোয়াব পাওয়া যায়। সেগুলোর একটি তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১। যে ব্যক্তি অন্যকে দ্বীনের জ্ঞানের শিক্ষা দেবে।
২। যে ব্যক্তি নদী প্রবাহিত হওয়ার কাজের সহযোগিতা করবে।
৩। পানির কুপ খনন করা। আগেকার দিনের মানুষ কূপ হতে পারে সংগ্রহ করত।
৪। গাছ লাগানো
৫। মসজিদ নির্মান ও নির্মাণের কাজে সহায়তা করা
৬। মানুষের মাঝে কুরআন বিতরণ করা
৭। দুনিয়াতে সু সন্তান রেখে যাওয়া যারা কিনা মৃত্যুর পরেও সেই ব্যক্তির জন্য দোয়া প্রার্থনা করবে।
(বাহরুজ জাখখার, ১৩/৪৮৪)
আমাদের সবাইকে আখিরাতের জীবন সম্পর্কে ভাবতে হয়। কারণ দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং যেকোনো সময় আমাদের এই দুনিয়া ত্যাগ করতে হবে। আর পরকালে যদি আমরা সফল হতে না পারি তাহলে চিরজীবন জাহান্নাম ভোগ করতে হবে। কিন্তু সেই অবরনীয় দুঃখের জায়গায় কেউই আমরা যেতে চাই না। আর মন আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর রহমত প্রাপ্তির জন্য অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। মসজিদে দান করার সওয়াব তার মধ্যে অন্যতম।