সহজ কিস্তিতে এনজিও থেকে লোন তোলার নিয়ম কি

বিভিন্ন বিপদে আপদে আমাদের হঠাৎ করেই টাকার প্রয়োজন হয়। আশেপাশে কারো কাছে ধার না পেলে শেষ ভরসা হচ্ছে এনজিও থেকে লোন তোলা। তবে এর জন্য মানতে হয় বিশেষ কিছু নিয়ম এবং শর্ত। সেই সাথে দরকার হয় কিছু কাগজপত্র।

সকল শর্তাবলী এবং কাগজপত্র সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে সহজ কিস্তিতে পাওয়া যায় এনজিও থেকে লোন। আপনি যদি এনজিও থেকে লোন তোলার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করে থাকেন তাহলে নিচের তথ্য গুলি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এতে করে আপনার সহজেই লোন তোলার উপায় বলে জানতে পারবেন।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার উপায়

মূলত সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই লোন কার্যক্রমের বিভিন্ন ক্যাটাগরি রয়েছে। এর মানে হচ্ছে আপনি কি কাজের লোন নিতে চান। সেটি হতে পারে বিজনেস, চিকিৎসা, সম্পদ ক্রয়, বিদেশে উচ্চ শিক্ষা ইত্যাদি। মূলত এই ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে লোনের পরিমাণ, ইন্টারেস্টের পরিমাণ, লোনের মেয়াদ কতদিন হবে ইত্যাদি নির্ভর করে।

টাকার পরিমাণও নির্ভর করে এই ক্যাটাগরির উপর। আপনি যদি ছোটখাটো বিজনেস কিংবা অন্য কোন কাজে অল্প টাকা যেমন ১ লক্ষ টাকার মত লোন নিতে চান তাহলে সহজে পেয়ে যাবেন। এটি পরিশোধ করতে হয় মূলত ১ বছর বা বারো মাসের মধ্যে। কিস্তি দিতে পারবেন আপনি সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে।

আর যদি সম্পত্তির ক্রয়, বাড়িঘর নির্মাণ ইত্যাদি কাজে ৫ থেকে দশ লক্ষ টাকা বা তার অধিক লোন নিতে চান তাহলে এর প্রয়োজন হবে বেশ কিছু কাগজপত্র। আবার আপনি চাইলে এই সকল লোনের মেয়াদ ১ থেকে ৫ বছর বা তার বেশি পর্যন্ত করে নিতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার চাহিদা অনুযায়ী যে কোন এমাউন্টের টাকায় আপনি একজন থেকে লোন হিসেবে নিতে পারবেন।

এনজিও থেকে লোন নিতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়

যদিও এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে লোনের ধরণের উপর তারপরেও যে সকল কাগজপত্র গুলি অবশ্যই প্রয়োজন হবে তা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।

১। ঋণ গ্রহীতার জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি। তবে ঋণ গ্রহণের সময় মূল কপি দেখতে চাইতে পারে।

২। এনজিও ভেদে ২ থেকে ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি। অনেক প্রতিষ্ঠানে আবার স্বামী-স্ত্রীর একসাথে ছবি জমা দিতে হয়।

৩। একজন জামিনদারের ভোটার আইডি কার্ডের কপি ও এক কপি রঙের ছবি। জামিনদার মূলত ঋণ গ্রহীতার অবর্তমানে এর দায়ভার গ্রহণ করার ঘোষণা দিয়ে থাকে।

৪। ব্যবসায় কিংবা দোকানে ইনভেস্টমেন্টের জন্য লোন নিতে হলে ট্রেড লাইসেন্স চাইতে পারে।

৫। যেহেতু ছোট ছোট এনিজও গুলো এলাকা ভিত্তিক লোন প্রদান করে থাকে তাই প্রতিটি কেন্দ্রের একজন সভাপতি নির্ধারণ করা হয়। লোন নেওয়ার জন্য সেই সভাপতির অবশ্যই সম্মতির প্রয়োজন হবে।

৬। আয়ের প্রমাণপত্র হিসেবে আইডি কার্ড, স্যালারি শিট, পে স্লিপ অথবা ব্যাংক স্টেটমেন্ট চাইতে পারে।

এছাড়াও আপনি কি কাজ করছেন এবং লোন নিয়ে কি করতে চান সে সম্পর্কে মৌখিকভাবে জানতে যেতে পারেন।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার পর কত টাকা ইন্টারেস্ট দিতে হয়

এটি মূলত নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের উপর। ১ বছরে লোনের উপর ইন্টারেস্টের পরিমাণ ১০% থেকে ২৫% পর্যন্ত হতে পারে। কোন কোন এনজিও আছে যারা কিনা আগের টাকা পরিশোধ করলে ইন্টারেস্টের পরিমাণও কমিয়ে রাখে। অর্থাৎ আপনি যদি ১২ মাসের লোন ৬ কিংবা ৭ মাসে পরিশোধ করে দেন তাহলে ইন্টারেস্ট হতে বেশ কিছু ছাড় দিয়ে থাকে।

লোনের জন্য আবেদন করবেন কিভাবে

আবেদন করা একদম সহজ। এজন্য ছবি ভোটার আইডি কার্ড এবং অন্যান্য প্রয়োজনে কাগজপত্র সহকারে এনজিও অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর আপনার এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাগজপত্র গুলি দেখে আপনাকে এনজিওতে ভর্তি করাবে। এরপর কিছু টাকা সেভিংস জমা প্রধান সাপেক্ষে আপনি লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তারপর ম্যানেজার এবং কর্তৃপক্ষ সেটা পাশ করে দিলেই আপনাকে টাকা প্রদান করা হবে। সেই সাথে জানিয়ে দেওয়া হবে লোক সংক্রান্ত অন্যান্য সকল শর্তাবলী।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার সুবিধা গুলি কি কি

যারা বিজনেস করবেন কিংবা বিদেশ যেতে চা কিংবা অন্য কোন কাজে টাকা ইনভেস্ট করতে চান তারা ইন্ডিয়া থেকে লোন নিয়ে থাকে। এ সুবিধা হচ্ছে এককালীন বড় অ্যামাউন্ট এর টাকা নিয়ে সেটি প্রতি মাসে ধীরে ধীরে পরিশোধ করা যায়।

এমনকি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরই লোনের কিস্তি সংগ্রহ করা থাকে যার যার এলাকা থেকে। আবার মূল ঋণ গ্রহীতা যদি স্বাভাবিক মৃ-ত্যু-বরণ করেন তাহলে অনেক প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী ঋণ মওকুফ করে দেওয়া হয়।

আশা করি আপনারা এনজিও থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন।

Leave a Comment