আমরা প্রকৃতি হতে সাধারণত ২ ধরনের শক্তি পেয়ে থাকি। সেই দুই ধরনের এনার্জি অর্থাৎ নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য শক্তির মধ্যেও আজকে আমরা পার্থক্য জানবো। তবে পার্থক্য গুলো জানার আগে অবশ্যই সংজ্ঞা এবং এই ২ ধরনের শক্তি কাকে বলে, কোথা থেকে পাওয়া যায় সে সম্পর্কে ভালোভাবে জানা উচিত।
নবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে
নবায়নযোগ্য শব্দটির মধ্যে মূলত এর সংজ্ঞা নিহিত রয়েছে। এটি হলো এমন এক ধরনের শক্তি যেটি পুনরায় কিংবা বারবার ব্যবহার করা যায়। সহজ ভাষায় বললে এ শক্তি উৎস কখনও শেষ হয় না।
উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি সূর্যের আলো, তাপ, বাতাস, পানির প্রবাহ, বিভিন্ন ধরনের জৈব শক্তি, ভূপৃষ্ঠের তাপ, সমুদ্রের জোয়ার ভাটা ইত্যাদি। শিক্ষার্থী বন্ধুরা তোমরা চিন্তা করে দেখো সূর্যের আলো নিয়ে আমাদের কখনোই ভাবতে হয় না যে এটি শেষ হয়ে যাবে। হ্যাঁ, সূর্যের নির্দিষ্ট বয়স শেষ হয়ে যাওয়ার পরে এটি আস্তে আস্তে নিভতে যাওয়া শুরু করবে। তবে বর্তমান সময়ে এবং আগামী কোটি কোটি বছর ধরে এটি তো জ্বলতে থাকবে। এই সময়টাতে সূর্যের আলো কখনোই নিঃশ্বাস হবে না এরকম এটাকে আমরা প্রতিদিনই একইভাবে পেতে থাকবো।
ঠিক একইভাবে সমুদ্রের জোয়ার, ভাটা, বাতাস ইত্যাদি নবায়নযোগ্য শক্তির উদাহরণ। কারণ এগুলো উৎস কখনও শেষ হবে না। যতদিন পর্যন্ত পৃথিবী টিকে থাকবে এ শক্তি গুলোও থেকে যাবে।
অনবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে
এটি এমন এক ধরনের শক্তি যেটি নবায়ন করা যায় না কিংবা নতুন করে তৈরি করা যায় না। মানুষ যত বেশি এই শক্তি ব্যবহার করতে থাকবে তত বেশি এটি নিঃশেষে থাকবে। আমরা প্রকৃতি হতে যে বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি পায় যেমন গ্যাস, প্রাকৃতিক সম্পদ, কয়লা ইত্যাদি।
তেলের খনিতে যদি তেল শেষ হয়ে যায় তাহলে সেটি আমরা আর উত্তোলন করতে পারব না। যার কারণে এটিকে বলা হচ্ছে অনবয়নযোগ্য সত্যি।
নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য শক্তির মধ্যে পার্থক্য কি
১। নবায়নযোগ্য শক্তি বারবার ব্যবহার করা যায় এবং এর পরিমাণ অফুরন্ত। অনবায়নযোগ্য শক্তি বারবার ব্যবহার করা যায় না এবং এর পরিমাণ সীমিত।
২। নবায়নযোগ্য শক্তি উৎস টি কখনোই শেষ হয় না বরং মানুষ যতই ব্যবহার করুক না কেন সেটি নির্বিচ্ছন্নভাবে পাওয়া যায়। অপরদিকে অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎস একটি সময় শেষ হয়ে যায়।
৩। নবায়নযোগ্য শক্তির অপর নাম অক্ষয় অর্থাৎ যেটি কখনো ক্ষয় হয় না। কিন্তু ব্যবহারের ফলে নেবার যোগ্য শক্তি ক্ষয় হয়ে যায়।
৪। নবায়নযোগ্য এবং অনবায়নযোগ্য শক্তি পার্থক্য গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নবায়নযোগ্য শক্তি গুলি সাধারণত পরিবেশবান্ধব হয়ে থাকে। অর্থাৎ পরিবেশের কোন ক্ষতি করে না কিংবা কালো ধোঁয়া উৎপন্ন করে না। যেমন সূর্যের আলো থেকে আমরা অনেক শক্তি পাই কিন্তু এটি প্রকৃতির তেমন ক্ষতি করে না।
অপরদিকে অনবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। যেমন জ্বালানি কয়লা, প্রাকৃতিক তেল ইত্যাদি পোড়ানোর কারণে কালো ধোয়া উৎপন্ন হয়।
যেহেতু নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের শেষ নেই এবং পরিবেশবান্ধব তাই তো বিশ্বব্যাপী এই ধরনের শক্তির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে অনবায়নযোগ্য শক্তির ভবিষ্যৎ বেশ অনিশ্চিত। কারণ মানুষ যত বেশি এ ধরনের শক্তি গুলো ব্যবহার করা হচ্ছে এর পরিমাণ অথচ কমে আসছে। আশা করি শিক্ষার্থী বন্ধুরা তোমরা জানতে পেরেছো নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য শক্তির মধ্যেও পার্থক্য গুলি কি কি।