আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কোন জিনিস হারিয়ে গেলে সবার আগে অনলাইনে জিডি করার প্রয়োজন পড়ে। এর কারণ হচ্ছে হারানো বস্তুটি ব্যবহার করে কেউ যেন কোন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড না করতে পারে। এমনকি জিনিসটি খুঁজে পাওয়ার জন্য আইনি সহযোগিতা পেতেও এ প্রক্রিয়াটি খুবই জরুরী।
ধরুন আপনার মূল্যবান সার্টিফিকেট অথবা হাতের মুঠোফোনটি হারিয়ে গেছে। এখন সেই ফোন ফিরে পেতে যদি পুলিশের সহায়তা নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। অথবা সে ফোন ব্যবহার করে যদি কোন অপরাধ করা হয় তাহলে তার দায়মুক্তি পেতেও আপনাকে জিডির কপি সাবমিট করতে হবে।
কিংবা আপনার মূল্যবান সার্টিফিকেট, আইডি কার্ড, চেক বই, জমির দলিল কিংবা অন্য কোন ডকুমেন্টস হারিয়ে গেছে। তাহলে সেটি উদ্ধার করার জন্য অবশ্যই আপনাকে ঘরে বসে জিডি করতে হবে। এখানে ঘরে বসে উল্লেখ করেছে কারণ বর্তমানে এই ধরনের জিডি বাসায় বসে মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমেই করা যায়। এটি খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া। যার কারণে খুবই দ্রুত সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই আপনি এটাই করতে পারবেন।
অনলাইনে জিডি করার উপায় কি
ঘরে বসে জিডি করার জন্য আপনাকে প্রথমে বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট gd.police.gov.bd তে প্রবেশ করতে হবে। উক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পরেই আপনি সাধারণ ডায়েরি করার জন্য একটি পেইজ দেখতে পারবেন।
এর জন্য আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর, মোবাইল নম্বর, জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে। প্রদত্ত ফোন নম্বর ভেরিফিকেশনের জন্য মোবাইলে একটি কোড আসবে। করতে সাবমিট করে আপনি পরের ধাপে চলে যাবেন।
এই ধাপে নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন ধরনের জিডি করতে চান বা কি ধরনের পণ্য খুঁজে পেতে চান সেটি। জিডির ধরন নির্বাচন করার পরে পণ্য হারানোর এলাকার সিলেক্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে বিভাগ, জেলা, থানা, ওয়ার্ড, ইত্যাদি অপশন থেকে নির্বাচন করতে হয়।
অনলাইনে ভিডিও করার তৃতীয় ধাপে হারানো বস্তুর বর্ণনা এবং সম্পর্কিত ঘটনা লিখে দিতে হবে। যেমন কোন ধরনের কাগজ হারিয়ে গিয়েছে, সেটির রং কি রকম, কোন এলাকায় হারিয়েছে কখন হারিয়েছে, কত তারিখে হারিয়েছে ইত্যাদি। আর সে কাগজের সাথে সম্পর্কিত যদি অন্যান্য কোন কাগজ থাকে কিংবা সেটির কপি থাকে তাহলে সেই ছবিও সংযুক্ত করা যাবে।
মোবাইলের ক্ষেত্রে অবশ্যই সেটির মডেল, কেনার সাল, রং ইত্যাদি লিখে দেবেন। তারপর প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদান করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই ঘরে বসে অনলাইনে জিডি করা হয়ে যাবে। সাবমিট করার পর আবেদনকারীকে একটি কপি প্রদান করা হবে। যেটির পরবর্তীতে প্রয়োজন হতে পারে। এমনকি অনলাইনে যেটির সর্বশেষ অবস্থাও যাচাই করা যাবে।
কোন কোন বিষয়ে ঘরে বসে জিডি করা যাবে
আমি তো উপরে মোবাইল, সার্টিফিকেট ইত্যাদি বস্তুর বিষয়ে উল্লেখ করেছে। অনেকেই জানতে চান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত GD অনলাইনে করা যাবে কিনা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনা যেগুলো কিনা তথ্য যাচাই এবং তদন্ত করার প্রয়োজন পড়ে সেগুলোর ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই থানায় গিয়ে জিডি করতে হবে। এমনকি আরও সম্পর্কিত ঘটনার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে তাদেরকেও সশরীরে উপস্থিত কে দায়িত্ব কর্মকর্তার নিকট জিডি সাবমিট করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু হারিয়ে গেলে কেন জিডি করা জরুরী
এজন্য আপনাকে উদাহরণ দেই। মোবাইল হারানোর পর যদি সেই ফোন বা সিম ব্যবহার করে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড করা হয় তাহলে সিম এবং ফোনের মালিক হিসেবে সেটির দায়ভার আপনার উপর আসতে পারে। ধরুন সিমটা ব্যবহার করে আপনার কোন আত্মীয়-স্বজন এর কাছে টাকা চাওয়া হলো। যেহেতু নম্বরের মালিক আপনি তাই তারাও বিশ্বাস করে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারে।
অথবা এমন কোন সার্টিফিকেট, আইডি কার্ড হারিয়ে গিয়েছে যেটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতিও করা হতে পারেন। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোনভাবেই দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব থানায় বা অনলাইনে জিডি করা প্রয়োজন। এটি যে শুধুমাত্র নিরাপত্তায় প্রদান করে তা নয় বরং হারানো বস্তু উদ্ধার পেতেও সাহায্য করে।