দিন দিন কঠিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রিপারেশন। যদি কিনা এই প্রস্তুতি ভালো না হয় তাহলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। যেহেতু দিন দিন প্রতিযোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে তাই অনেক ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্বেও পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষায় টিকতে পারে না অনেক শিক্ষার্থীরা। তাই কিভাবে দেশের সেরা ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন এক্সামে ভালো করবেন সে বিষয়ে থাকছে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।
যদিও নিচের এই টিপসগুলো সহায়ক হিসেবে কাজ করবে তবুও নিয়মিত পড়াশুনার বিকল্প কোন কিছু নেই। আর যাদের কিনা পূর্ববর্তী প্রস্তুতিতে কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে তাদের আরো অনেক বেশি সময় করা প্রয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রিপারেশন
এসএসসি এবং এইচএসসি শেষ করার পর সকল শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য থাকে কাঙ্খিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত সাবজেক্টে চান্স পাওয়ার। যেহেতু ইউনিভার্সিটি গুলোতে নির্দিষ্ট ডিপার্টমেন্টে আসন সংখ্যা সীমিত থাকে তাই মেধা তালিকায় প্রথম দিকে না থাকলে সেই সাবজেক্টে চান্স পাওয়ার কঠিন হয়ে পড়ে। তবে আমি নিচে এমন কিছু টিপস আজকে শেয়ার করব যেগুলোর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী তার প্রিপারেশনকে আরো অনেক বেশি ভালো করতে পারে।
১. প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কে জানা
বর্তমানে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির গুরুত্ব বিভিন্নভাবে পরীক্ষা হয়। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মিলিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিত একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়া হয়। একইভাবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও একসাথে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ সকল এক্সামে প্রশ্নের ধরন আলাদা হয়ে থাকে। তাই প্রিপারেশনের শুরুর দিকেই একজন শিক্ষার্থীর উচিত এই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত সালের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে এনালাইসিস করা। এতে করে শিক্ষার্থীর সহজে বুঝতে পারবে তার কোন দিকে দুর্বলতা রয়েছে। পরবর্তীতে সেই টপিকসগুলোতে অনেক বেশি জোর দেওয়া প্রয়োজন।
২. সময় ব্যবস্থাপনা
এসএসসি পরীক্ষা শেষ করার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রিপারেশন নেওয়ার জন্য খুব বেশি সময় পাওয়া যায় না। এই সময়টাতে যদি আড্ডা, মোবাইল ফেসবুক ইন্টারনেট চালানোয় শিক্ষার্থীর সময় ব্যয় করে তাহলে সারা জীবনের জন্য পিছিয়ে পড়তে পারে। তাই অন্য সকল কাজ আপাতত বন্ধ রেখে পুরোপুরি ভাবে প্রস্তুতির প্রতি মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।
একই সাথে এটিও খেয়াল রাখতে হবে যে শুধুমাত্র বই নিয়ে বসে থাকলেই হবে না। বরং সর্বোচ্চ মনোযোগের সহিত এবং কি কি টপিক্স করছেন সেগুলো যাচাই করে করে পড়তে হবে। যেমন: যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনি ভাল বোঝেন সেগুলোই বারবার করছেন কিন্তু যেগুলোতে দুর্বল রয়েছেন সেগুলো সময় দিচ্ছেন না। এভাবে পড়লে কখনোই পুরোপুরি ভাবে প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব নয়।
৩. নিজেকে যাচাই করুন
প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি বাসায় বসে কিংবা বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের অধীনে মডেল টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া যেতে পারে। যেহেতু পরীক্ষার হলে সময় নির্দিষ্ট তাই এই নির্ধারিত অসময়ের মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
৪. আত্মবিশ্বাসী হতে হবে
আত্মবিশ্বাসীরা সবসময়ই এগিয়ে থাকে। একই সাথে রাখতে হবে দৃঢ় মনোবল। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে ভালো রেজাল্টের প্রতিযোগিতা থাকলেও নির্ধারিত আসনে চান্স পাওয়ার প্রতিযোগিতা থাকে না। ভর্তি পরীক্ষায়ই এসে একজন শিক্ষার্থী বুঝতে পারে যে পদে পদে হোঁচট খেতে হয়। এমন হতে পারে যে প্রথম দিকে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চান্স হয়নি। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোনভাবেই হতাশ হওয়া যাবে না। হয়তোবা নিজের ভুলের জন্য খারাপ লাগবে এবং মানসিক আস্থা চলে যাবে তবুও হেরে নাই গিয়ে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। কারণ বাংলাদেশ অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে কোথাও না কোথাও চান্স হয়ে যাবে।
৫. নিজের মতো করে পড়াশোনা করুন
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রিপারেশন নেওয়ার সময় আমরা আরো একটি ভুল করে থাকি সেটি হচ্ছে অন্যের উপদেশ বারবার গ্রহণ করে। তবে হ্যাঁ যারা ইতিমধ্যে এই ধরনের পরীক্ষায় ভালো করেছেন তাদের কাছ থেকে অবশ্যই উপদেশ গ্রহণ করা যায়। তবে আরেকজনের পড়ার স্টাইল তোমার কাজে নাও লাগতে পারে। তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে কোন ভাবে পড়লে তোমার মাথায় সেটি দ্রুত কাজ করে।
উপরে টিপস গুলো ছাড়াও আরো কিছু পরামর্শ রয়েছে। এই সময়টাতে যথাসম্ভব আড্ডা, ঘোরাফেরা ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকালে কিংবা বিকালে ব্যায়ামও করা যেতে পারে। কারণ পুরো সময় ধরে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষার আগে যদি অসুস্থ হয়ে যাও তাহলে পুরো কষ্টই মাটি হয়ে যাবে। শরীর যত ফিট থাকবে মানসিক অবস্থা ও তো ভালো থাকবে। আর পরীক্ষার প্রস্তুতি ও তত ভালো হবে।
রোমিং পদ্ধতিতে বিদেশে গিয়ে সিম ব্যবহারের নিয়ম
আমাদের শেষ কথা
পরিশেষে আমরা এটাই বলব যে ধৈর্য কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রিপারেশন নিজেকে অনেক বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তবুও অনেক সময় সঠিক প্রস্তুতির অভাব এবং ভুলের কারণে শেষে পরাজয় মেনে নিতে হয়। তবে এই ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস রেখে পরবর্তীতে আবার জয়ের আশায় প্রস্তুতি শুরু করা উচিত।