সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরসাইকেল কেনার আগে কি কি বিষয় জানা উচিত

সবসময় বেশি বাজেট দিয়ে নতুন ডিভাইস না কিনে আমরা পুরাতন জিনিসপত্র কিনে থাকি। ঠিক তেমনিভাবে সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার প্রবণতাও রয়েছে অনেকের মধ্যে। তবে এটি করার আগে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় জেনে রাখা উচিত। তা না হলে যেমনিভাবে ঠকতে পারেন ঠিক তেমনি ভাবে প্রতারিত হতে পারেন। আবার ভবিষ্যতে ভোগান্তির স্বীকারও হতে পারেন।

শখ করে হোক কিংবা প্রয়োজনে হোক একটি বাইক সব ছেলেরাই স্বপ্ন। বাজারে ইতিমধ্যে নতুন নতুন মোটরসাইকেলের পাশাপাশি এসেছে রয়েল এনফিল্ডের বাইক। যারা সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরসাইকেল কেনার চিন্তাভাবনা করছেন তাদের ক্ষেত্রে একটি দুশ্চিন্তা হচ্ছে কিনে প্রতারিত হব না তো। আর সেই দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মোটরসাইকেলের কাগজপত্র যাচাই

প্রতিটি বাইকের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর কাগজপত্র। এগুলো সঠিকভাবে আপডেট করা আছে কিনা কিংবা সকল রেজিস্ট্রেশন সঠিক উপায় সম্পন্ন করা হয়েছে কিনা সেটা যাচাই করে নিন। আবার যদি ইনস্যুরেন্স না করা থাকে তাহলেও গুনতে হতে পারে জরিমানা।

ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য ট্যাক্স টোকেন গুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ কিনা কিংবা কোনো ত্রুটি আছে কিনা সেটি দেখে নেওয়া ভালো। তা না হলে ভবিষ্যতে আপনাকে অর্থ জরিমানা গুনতে হতে পারে এবং পড়তে হতে পারে আই নিয়ে ঝামেলায়।

পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার আগে আরো কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত

পুরাতন বাইকের ইঞ্জিন

যেকোনো মেশিনেরই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে এর ইঞ্জিন। মানুষের যেমন হার্ট থাকে ঠিক তেমনি ভাবে প্রতিটি গাড়িরও একটি ইঞ্জিন থাকে। সবচাইতে ভালো হয় দক্ষ কোন টেকনিশিয়ানকে দিয়ে এই ইঞ্জিনটি ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নেওয়া। গাড়ি স্টার্ট করার সময় বাড়তি শব্দ করে কিনা কিংবা অতিরিক্ত গরম ওয়েল লিকেজ আছে কিনা সেগুলো দেখে নেয়া উচিত। তা না হলে সার্ভিসিং এর খরচ বাবদ আপনার অনেক টাকা চলে যাবে।

গাড়িটির সার্বিক অবস্থা কি

পুরাতন বাইক কেনার আগে এর চাকার টায়ার, গ্রিব, ব্রেক সিস্টেম, লাইট, হর্ন, বডিতে কোন মরিচা আছে কিনা ইত্যাদি দেখে নিন। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন মোটরসাইকেলটি কতদিন ব্যবহার করা হয়েছে এবং কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

আর ইতিমধ্যে মোটরসাইকেলটি যদি এক্সিডেন্ট করার ইতিহাস থাকে সেটিও আপনার ধারনায় চলে আসবে।

কত কিলোমিটার চালানো হয়েছে

যদিও এই সিস্টেমটি রিসেট করা যায় তবুও এটা যাচাই করুন। সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার আগে দেখে নিন সেটি ঠিক কতটুকু চালানো হয়েছে। কারণ একটি বাইক যত বেশি চালানো হয়ে থাকে সেটি তত বেশি মেরামতেরও প্রয়োজন হতে পারে। আবার অল্প একেছ দূরত্ব চালিয়েছে বলেই যে এটি পুরোপুরি ভাবে ভালো হবে সেটাও ধারণা করা ভুল।

পুরাতন বাইকের বাজার মূল্য কত

এটি নির্ভর করে কন্ডিশন এবং অন্যান্য কাগজপত্রের উপর। যাদের সকল কিছু ঠিক থাকে এবং গাড়ির কন্ডিশনে ভালো থাকে তাহলে এই দামে বাজারে আর অন্য কি কি গাড়ি পাওয়া যায় সেটা সাথে তুলনা করুন। বর্তমান বাজারে অন্যান্য গাড়ির বাজার দর সম্পর্কে ধারণা না থাকলে আপনি সঠিক মূল্যে গাড়ি ক্রয় করতে পারবেন না বিশেষ করে পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে।

বাংলাদেশে অনেক ফেসবুক এবং ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে পুরাতন মোটরসাইকেল ক্রয় বিক্রয় করা হয়ে থাকে। সেখানে যে গাড়িগুলো বিক্রয়ের জন্য দেয়া হয়েছে সেগুলোর দামের সাথে আপনার দামের তুলনা করুন। এতে করে সঠিক ধারণা পাবেন।

ইঞ্জিন, বাহ্যিক অবস্থা এবং কাগজপত্র ছাড়াও যে কোন মোটরসাইকেলের গিয়ার বক্স, ক্লাস এবং যে ফিচার্স গুলো রয়েছে সেগুলোতে পরীক্ষা করে নিন। বাইকটা যদি যত্ন সহকারে চালানো হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এগুলো ভালো থাকার কথা। সবশেষে পুরাতন মোটরসাইকেল ক্রয়ের আগে এর কাগজপত্র গুলো আপনার নামে কিভাবে ট্রান্সফার করবেন সে ব্যাপারে চুক্তি করুন।

Leave a Comment