রমজানের প্রস্তুতি ও ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিন

আর অল্প কিছুদিন পরেই মুসলমানদের পবিত্র মাহে রমজান। মহান আল্লাহ তাআলার নৈকট্য পাওয়ার জন্য এটি খুবই সর্বোৎকৃষ্ট একটি মাস। তাইতো রমজানের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন আগে থেকেই। সেই সাথে রমজানের ফজিলত সম্পর্কেও জানা উচিত। এতে করে আমরা সিয়াম পালন করার সঠিক অর্থ বুঝতে পারব।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা টানা এক মাস সিয়াম পালন করার পর উদযাপন করে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই সময়টা দিনের বেলা সকল ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। সেহরি খাবার পর সারাদিন অতিক্রম করে একেবারে সন্ধ্যারবেলা ইফতার করতে হয়। যেহেতু হঠাৎ করেই খাদ্যাভাস এবং জীবন-যাপনে পরিবর্তন আসে তাই আগে থেকে শারীরিক প্রস্তুতি নিবেন ভালো হয়। এছাড়াও এই সময়টাতে যেহেতু বেশ গরম থাকে অর্থাৎ তাপমাত্রা বেশি থাকে তাই শরীরে যাতে পুষ্টিহীনতা কিংবা পানি শূন্যতা দেখা না যায় সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ

আমি যখন এই আর্টিকেলটা লিখছি তখন রমজানের মোটামুটি আরো বেশ কয়েকদিন বাকি রয়েছে। তাই এখন থেকেই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারেন। এতে করে রোজার সময়সূচির সাথে নিজের শরীরের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন। সর্বপ্রথম উদ্যোগ হিসেবে রাতের খাবার এবং দুপুরের খাবারের পরিবর্তন আনতে পারেন।

যেহেতু সারাদিন আমাদের পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে তাই পুষ্টিকর খাবারের উপর বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত। একই সাথে সেহরির সময় অর্থাৎ রাতের খাবারের থেকে চর্বি তৈলাক্ত জাতীয় খাবার গুলো বাদ দিন। বেশি বেশি প্রোটিন আমি শর্করা এবং ভিটামিন জাতীয় খাবার খান যাতে সারাদিন কাজ করার জন্য শক্তি পেয়ে থাকেন।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও ফলের রস পান করা

যেহেতু আমাদের সারাদিন অর্থাৎ ভোর রাত থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি পান থেকেও নিজেকে বিরত রাখে তাই রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে আগে থেকেই ফলের রস ও পানি পান করা উচিত। এতে করে প্রথম কয়েকটি রোজায় অন্তত নিজের শরীরকে ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।

আবার সিয়াম পালন কালীন সময়। যত্রতত্র কোল্ড ড্রিংকস কিংবা শরবত না পান করে বিশুদ্ধ পানি, ডাবের পানি ইত্যাদি খেতে পারে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম

সুস্থ থাকার জন্য ঘুমের কোন বিকল্প নেই। সেহরি খাওয়ার জন্য আমাদেরকে অনেক ভোররাতে উঠতে হয়। তারাবি নামাজ শেষ করে কোন প্রকার দেরি না করে সাথে সাথে ঘুমানোর জন্য। এতে করে দেহে আর কোন জটিল কিংবা নেতিবাচক প্রভাব করবেন না এবং আপনিও থাকবেন ফিট।

ইফতারের সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, চিনি, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি। এছাড়াও কফি, এনার্জি ড্রিংকস, চিনিযুক্ত স্ন্যাকস ইত্যাদি পরিহার করুন।

রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে বেশি বেশি ইবাদত করা

শুধুমাত্র খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখতেই সিয়াম পালন এর উদ্দেশ্য নয়। বরং এ সময়টাতে বেশি বেশি ইবাদত করারও একটি সময়। তাই দুনিয়ার সকল কাজকর্ম থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন এবং এবাদতে মনোযোগী হন।

রমজানের ফজিলত

আমরা ইতিমধ্যে আমার রমজানের প্রস্তুতের সম্পর্কে কিছুটা জেনে গিয়েছি। এই মাসে আমরা ইবাদত করলে কি কি সওয়াব কিংবা ফজিলত পাব তার সম্পর্কে একটু জেনে নেই।

একজন মুসলিম বান্দর জন্য রমজান মাসের আগমন বড় মহান আল্লাহ তাআলার নিয়ামত গুলোর মধ্যে একটি। কারণ এই মাসটি খুবই কল্যাণময়। কোরআন হাদিসে এসেছে যে এই মাসে জান্নাতের দরজা গুলো খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পবিত্র রমজান মাস হচ্ছে সেই মাস যেই মাসে নাজিল করা হয়েছে আমাদের অন্যতম ধর্মগ্রন্থ কোরআন। এই মাসের ফজিলত অনেক বেশি এবং রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আর এই মাসেই জাহান্নাম থেকে নাজাত লাভ করা যায়। ইস্তেগফারের মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহতালার ক্ষমা পেতে পারি এবং জান্নাত লাভ করতে পারি।

এই মাসের প্রতিটি আমলে অন্যান্য মাসের চাইতে অনেক বেশি গুন সওয়াব পাওয়া যায়। এই মাসের একটি নফল আদায় করলে অন্য মাসে ফরজের সমান সওয়াব হয়। আর এই মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের ৭০ টি ফরজের সমান।

তাই আমরা রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করে নিজেকে তৈরি করে রাখবো। যাতে করে পুরো মাস ধরে আমরা সিয়াম পালনের পাশাপাশি বেশি বেশি ইবাদত করতে পারি।

Leave a Comment