রাজধানীতে অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের সাত কলেজের ভর্তি স্থগিত করা হয়েছে। চলতি সেশনের অনার্স বা স্নাতক/সম্মান কোর্সের প্রথম বর্ষে এই আবেদন ঢাবি কর্তৃপক্ষ স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ২৯ শে জানুয়ারি বুধবার একটি সভার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তটি জানানো হয়। এমনকি উক্ত ইউনিভার্সিটি ভর্তির কমিটির আহ্বায়ক সাংবাদিকদেরকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেন।
অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে ২৯ শে জানুয়ারি দুপুর ১২টা পর্যন্ত অ্যাপ্লিকেশন জমা পড়েছে ৩৫ হাজার ৫৩০ টি। এর আগে একবার ঢাকা ইউনিভার্সিটির অধিভুক্তি থেকে কলেজগুলোকে সরিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত জানানো হয়। আবার কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করার ঘোষণাও বাতিল করা হয়। তাই ঠিক কাদের অধীনে নতুন এই শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হবে সেটি স্পষ্ট করা হয়নি এবং ভর্তি প্রক্রিয়াতে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি ঢাকার সাত কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়ার অনলাইনে এপ্লিকেশন শুরু হয়েছে। আগামী ১২ ই ফেব্রুয়ারি ছিল এর সর্বশেষ তারিখ। সকল প্রক্রিয়া শেষে এপ্রিল মাসে এডমিশন এক্সাম নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন এটি স্থগিত করা হয়েছে। সাত কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া আগামী কবে থেকে শুরু হবে সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
রাজধানীর সাত কলেজের ভর্তি আবেদন স্থগিত করা হয়েছে
উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার অবস্থিত সাতটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢাকা ইউনিভার্সিটির অধীনে আনা হয়। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন রাজধানী ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেছা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ সকল কলেজসমূহে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২ লক্ষ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন উক্ত ইউনিভার্সিটির অধীনে পরিচালিত হলেও পুরোপুরি ভাবে পরীক্ষা এবং অন্যান্য বিষয়ে জটিলতা পুরোপুরি সমাধান হয়নি।
যার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন যাতে ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে সরিয়ে এনের সাত কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া সহ অন্যান্য সকল কার্যক্রম স্বতন্ত্র ভাবে পরিচালিত করা হয়। যদিও এ ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে কোন নির্দেশনা আসেনি। আমরা জানি বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি একটি বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হয়। প্রতিটি কলেজে আলাদাভাবে ক্লাস এবং পরীক্ষাও নেওয়া হয়। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধীনেই চূড়ান্ত সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় যেমনটা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে.
দেশের অন্যান্য সকল কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হলেও এই সাতটি কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়াসহ সকল ধরনের কার্যক্রম ঢাকা ইউনিভার্সিটি এর মাধ্যমে পরিচালিত হতো। বাকি নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এখানে আরেকটা উল্লেখিত বিষয় হচ্ছে যে বিগত বেশ কিছু বছর ধরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন প্রক্রিয়া এসএমএসের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
অর্থাৎ কোন ধরনের লিখিত বা মসজিদ পরীক্ষা ছাড়াই এসএসসি ও এইচএসসি রেজাল্টের ভিত্তিতে আবেদন ও কলেজ চয়েজ দিতে হতো। পরবর্তীতে জিপিএ কলেজ এবং সাবজেক্টের ভিত্তিতে বিভিন্ন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিগুলোতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেতো। কিন্তু এবার থেকে পুনরায় লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার কথা শোনা গিয়েছে।
সারা বাংলাদেশে সরকার অনুমোদিত পাবলিক এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি রয়েছে মোট ১৭৬ টি। এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আন্ডারে মোট শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে ৩১ লক্ষ ৭০ হাজারের অধিক। যা কিনা উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরতম শিক্ষার্থীর প্রায় ৭২ ভাগ। এমনকি উক্ত বোর্ডের অধীনে ২৫৭ টি কলেজ রয়েছে। যার মত ৫৫৫টি পুরোপুরি সরকারি।