সিম হারিয়ে গেলে বন্ধ করবেন কিভাবে

বর্তমানের ডিজিটাল এই যুগে মোবাইল ছাড়া এক মুহূর্তে চলা যায় না। আর মোবাইলের সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সিম কার্ড। অনেক সময় হারানো সিম বন্ধ করার উপায় আমাদের জরুরি ভিত্তিতে জানার প্রয়োজন পড়ে। কারণ মোবাইলটি হারিয়ে গেলে সেই সাথে আমাদের সিমটিও হারিয়ে যায়। তাই তো যেকোনো ধরনের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সিমটি বন্ধ করা জরুরি।

মোবাইলের মাধ্যমে আমরা এখন ইন্টারনেট ব্যাংকিং, বিকাশ, রকেট, নগদ ইতিহাস বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্ট, অফিসের কাজ ইত্যাদি পরিচালনা করে থাকি। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতেও অ্যাকাউন্ট ওপেন করতেও আমাদেরকে ফোন নম্বর ব্যবহার করতে হয়। যদি আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি কোন অসাধু ব্যক্তি হাতে পড়ে তাহলে তিনি এগুলোর অ্যাক্সেস নিয়ে অনেক ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কিংবা প্রতারণা করতে পারে।

তাই সিম হারিয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সেটি অবশ্যই বন্ধ করা প্রয়োজন।

আবার ধরুন সিমটিতে আপনার ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ইত্যাদি অ্যাকাউন্ট ওপেন করা রয়েছে। সেটি দিয়ে আপনার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব, এমনকি অফিস কলিগদের কাছেও প্রতারক মেসেজ দিয়ে টাকা পয়সা চাইতে পারে কিংবা অসদাচরণ করতে পারে। তাই এ ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিচের পুরো আর্টিকেলটি পূরণ এবং জেনে নিন হারানো সিম বন্ধ করার উপায়।

সিম হারিয়ে গেলে বন্ধ করবেন কিভাবে

আমাদের মোবাইল রাস্তাঘাটে হারিয়ে যেতে পারে, ছিনতাই হতে পারে কিংবা চুরিও হতে পারে। তবে আপনি যেহেতু জানেন না বর্তমানে মোবাইলটি যার কাছে আছেন তিনি কতটা সৎ কিংবা অসৎ তাই সিমটি বন্ধ করে দেওয়ায় সবচাইতে বুদ্ধিমানের কা।

একটি সিম আপনি ২ ভাবে বন্ধ করতে পারেন। যার একটি হচ্ছে স্থায়ীভাবে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেওয়া এবং অপরটি হচ্ছে সাময়িকভাবে সিম বন্ধ করা।

প্রথম উপায় যদি আপনি স্থায়ী ভাবে রেজিস্ট্রেশন টি বাতিল করে দেন তাহলে সিমের মালিকানা হারাবেন। আর পরবর্তীতে সেই সিমটি অন্য যে কেউ কোম্পানির কাছ থেকে কিনে নিতে পারে।

আর দ্বিতীয় উপায়টি হচ্ছে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া। এর মাধ্যমে সিমের সকল সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আপনি আবার পুনরায় সেটিকে চালু করতে পারবেন কিংবা কাস্টমার কেয়ার হতে উঠাতে পারবেন।

সিম বন্ধ করবেন কিভাবে

এর জন্য আপনাকে প্রথমে সিম অপারেটরের হেল্পলাইন অথবা ১২১ নম্বরে কল করতে হবে। কল করার পর একজন কাস্টমার প্রতিনিধির সাথে আপনার সিম বন্ধের বিষয়টি বলুন। এবং তাকে জানান সেটি কি আপনি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে চান নাকি সাময়িকভাবে স্থগিত করতে চান।

পুরো বিষয়টি জানানোর পর তিনি আপনার কাছে বিভিন্ন রকম তথ্য চাইবে। তথ্য গুলো নেয়া হয় সিমের মালিকানা নিশ্চিত করার জন্য। অর্থাৎ আপনি সেই সিমের মালিক কিনা।

এর জন্য আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর, জন্ম তারিখ, সর্বশেষ কত টাকা ব্যালেন্স ছিলো, সর্বশেষ কত টাকা রিচার্জ করেছেন ইত্যাদি তথ্য জানতে চাইবে। এমনকি সেই সিমটের সাথে যদি অন্য কোন নম্বরে এফএনএফ করা থাকে সেগুলোর তথ্য জানতে চাইতে পারে। তাই হারানো সিম বন্ধ করার জন্য কাস্টমার কেয়ারে কল দেওয়ার আগে এ সকল তথ্য গুলি সংগ্রহে রাখুন।

এমনকি একইভাবে আপনি স্থায়ীভাবে সিমের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রেও একই ধরনের কাগজপত্র এবং তথ্য গুলো চাইতে পারে।

কাস্টমার সেন্টারে গিয়ে হারানো সিম বন্ধ করার উপায়

আপনি চাইলে আপনার সিম অপারেটর নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ারে গিয়েও এটি বন্ধ করতে পারবেন। এজন্য সাধারণত জেলা কিংবা বিভাগীয় অফিসে যেতে হয়।

তিনিও আপনার কাছে উপরোক্ত ইনফরমেশন গুলো জানতে চাইবে। আগে থেকেই আপনি নির্ধারণ করে রাখুন সিমটির রেজিস্ট্রেশনটি কি পুরোপুরি ভাবে বাতিল করবেন নাকি হারানো সেইম সাময়িকভাবে বন্ধ করবেন।

তবে হারিয়ে যাওয়া সিম বন্ধ করার জন্য অবশ্যই সিমকে যার নামে রেজিস্ট্রেশন করা আছে তাকে কাস্টমার কেয়ারে উপস্থিত হতে হবে।

সিম হারিয়ে গেলে অন্যান্য সচেতনতা

বাসে, অফিসে, রাস্তায় আমাদের মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এমনকি ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই হওয়ার ঘটনাও রয়েছে অনেক। আপনি যদি এ ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সম্মুখীন হন তাহলে সাথে সাথে নিকটস্থ থানায় একটি জিডি করুন। এমনকি আপনার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কে মোবাইলে ফোন করে কিংবা ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়ে দিন যে আপনার সিমটি হারিয়ে গিয়েছে।

আর আপনি যদি সেই সিমটিতে মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন তাহলে সেই সার্ভিসের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে সাময়িকভাবে একাউন্টে বন্ধ করতে পারেন। এতে করে প্রতারক আপনার একাউন্ট থেকে কোন ধরনের টাকা পয়সা হাতে নেওয়ার সুযোগ পাবে না। সিম হারিয়ে গেলে বন্ধ করার উপায় জানার পাশাপাশি এই ধরনের পদক্ষেপগুলো নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।

আবার আপনি যদি এই ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন কিংবা চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলে কলিগ এবং কর্মচারীদের কেউ এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিন। যাতে করে আপনার নাম্বার ব্যবহার করে কোন অর্থ চাইলে সেটি না প্রদান করার।

আমাদের শেষ কথা

হারিয়ে যাওয়া সিম বন্ধ করার উপায় এবং এ নানা বিষয় সম্পর্কে আমি বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সিম অপারেটরই সরকারের আইন দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই নির্ভুল তথ্য দিয়ে এধরনের কাজ গুলি সম্পন্ন করবেন।

Leave a Comment