জনপ্রিয় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট স্টারলিংক কি

বিগত অনেক বছর আগে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ইন্টারনেট সেবা। এমনকি সময়ের সাথে সাথে ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্পদের সময়ে ইলন মাস্কের স্টারলিংক কি সে ব্যাপারে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে স্যাটেলাইট ভিত্তিক এই ধরনের সার্ভিস বাংলাদেশ এবারই প্রথম।

এই বিষয়টির সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে কিভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা কাজ করে থাকে। ইন্টারনেট মানে হচ্ছে পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে থাকা একটি জাল। আমরা জানি ইন্টার শব্দটির অর্থ অভ্যন্তর এবং নেট শব্দটির অর্থ জাল। সারা পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস যেমন কম্পিউটার, ডেক্সটপ, মোবাইল ইত্যাদি একে অপরের সাথে যে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যুক্ত থাকে তাকে বলা হয় ইন্টারনেট। আর একটি device যখন অন্য একটি ডিভাইসের সাথে তথ্য আদান প্রদান করে তখন এর মাঝখানে নেটওয়ার্কের ফ্রিকোয়েন্সি গুলো টাওয়ার কিংবা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।

আমাদের দেশে আমরা যে ব্রডব্যান্ড বা ওয়াইফাই ব্যবহার করি সেটি অন্য একটি দেশে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে ক্যাবলের মাধ্যমে আনা হয়ে থাকে। যার কারণে যখন এই কেবলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন নেট সেবা বিঘ্নিত হয়।

ইলন মাস্কের স্টারলিংক কি

স্টারলিংক ইন্টারনেট হচ্ছে এমন একটি প্রজেক্ট যার মাধ্যমে সরাসরি স্যাটেলাইট হতে কোন দেশ বা এলাকায় ইন্টারনেট সুবিধার প্রদান করা হয়ে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানটির মালিক বিশ্ব বিখ্যাত ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। আর যেহেতু সরাসরি আকাশ হতে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রদান করা হবে তাই যেকোনো ধরনের দুর্গম যেমন পাহাড়ি সামুদ্রিক চর এলাকায় খুব সহজেই অত্যন্ত দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রদান করা যাবে।

আশা করি এখন আপনারা কিছুটা ধারণা করতে পারছেন যে স্টারলিংক কি। সম্প্রতি আমাদের দেশে এই সেবাটি চালু করা হবে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর প্রকাশিত হচ্ছে।

ইলন মাস্কের এই ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী স্যাটেলাইট ব্যাক উপগ্রহ আমাদের পৃথিবীর একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথ্যেগে প্রদক্ষিণ করে। যেটির মূল ভূপৃষ্ঠ হতে প্রায় ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিঃমিঃ উপরে অবস্থিত রয়েছে। এই কৃত্রিম উপগ্রহের ভিত্তিক ইন্টারনেট পুরো পৃথিবীর জুড়েই খুবই উচ্চ গতির নেট সার্ভিস প্রদান করতে পারে। বিগত ৩০ শে জানুয়ারি এর তথ্য মতে এখন পর্যন্ত starlink এর 6994 টি উপগ্রহ স্থাপিত রয়েছে। আর এটা যাত্রা শুরু করে সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে। যদিও ২০১৯ সাল থেকেই এটির সেবা দান শুরু হয়েছে।

স্টারলিংক কি এখন আশা করি আরো বিষয়টি ক্লিয়ার হয়ে গিয়েছে।

স্টারলিংক ইন্টারনেটের মাধ্যমে কেমন ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে

এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের হতে যে কোন তথ্য কিংবা ফাইল ডাউনলোড এর গতি পাওয়া যাবে ২৫ থেকে ২২০ এমবিপিএস। এখানে এমবিপিএস বলতে মেগাবাইট পার সেকেন্ড বসানো হয়েছে। আর ইন্টারনেটের যেকোনো ফাইল আপলোডের গতি হবে ৫ থেকে ২০ এমবিপিএস।

কেমন খরচ হবে স্টারলিং ইন্টারনেট নিতে

এর জন্য প্রথমে একটি কিট কিনতে হবে। আমরা যখন তারা সংযোগ ছাড়াই ডিস লাইন ব্যবহার করে তখন আমাদেরকে একটি এন্টেনা কিনতে হয়। ঠিক তেমনিভাবে একটি কিট কিনতে হবে যেটির বাংলাদেশের মূল্য ৪৩ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও আবাসিক এলাকায় যারা ব্যবহার করবেন তাদের জন্য প্রতি মাসে এর বিল প্রদান করতে হবে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর যারা কর্পোরেট কিংবা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করবেন তাদের জন্য এই ফি আরও বেশি।

স্টারলিংক ইন্টারনেট কি সেটি জানার পর এখন সবার মনেই প্রশ্ন আসছে যে এটি কবে থেকে ব্যবহার করতে পারবেন। যেহেতু এই সার্ভিসটির মাধ্যমে ইন্টারনেটের প্রদানে যেকোনো দেশের কর্তৃপক্ষ বা সরকারি হস্তক্ষেপের বিষয়টি থাকে না তাই অনেক বেশি এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ের বিপরীত মনে করেন। তবে বাংলাদেশকে খুব শীঘ্রই স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা আসবে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

Leave a Comment