আজকে বিনিয়োগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। তার মধ্যে একটি হচ্ছে শেয়ার বাজার এবং অপরটি হচ্ছে স্টক এক্সচেঞ্জ কি। এছাড়াও সাথে রয়েছে খুঁটিনাটি অন্যান্য বিষয়াদি। যেকোনো প্রতিষ্ঠানে তার ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করার জন্য শেয়ার বিক্রি করে মূলধন বাড়াতে থাকে। বিনিয়োগকারীরা আবার সেই শেয়ার কিনে এবং পরবর্তীতে লাভ পেলে বিক্রি করে দেয়।
স্টক এক্সচেঞ্জ (Stock Exchange) হল এমন একটি বাজার কিংবা স্থান যেখানে স্টক এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও অর্থ ও স্টক ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে। এটি যে কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে একজন ক্রেতা এবং বিক্রেতারা সরাসরি বাণিজ্য অংশ অংশগ্রহণ করতে পারে। যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানও খুব সহজেই তার মূলধন বাড়াতে থাকে।
এই বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিরা শেয়ার লেনদেন হয়ে থাকে। যদি উদাহরণ দিয়ে বোঝায় তাহলে আপনারা আরো স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারবেন। ধরুন আপনার একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের মোট মূলধন ১০ কোটি টাকা। কিন্তু আপনার কিছু অর্থ সংগ্রহ করা প্রয়োজন। তখনই স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ারসমূহ বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। আবার ক্রেতারা এগুলো কেনার পর কখনো যদি মনে চায় তাহলে বিক্রিও করতে পারে। চাহিদা এবং সরবরাহের ভিত্তিতে এর মূল্য বাড়তে কিংবা কমতেও পারে।
বাংলাদেশের কয়টি স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে
বর্তমানে বাংলাদেশে ২ স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে যার মধ্যে একটি হচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং অপরটি হচ্ছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (Dhaka Stock Exchange)
এটি প্রতিষ্ঠিত হয় হাজার ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল। প্রথমদিকে এর নাম ছিল ইস্ট পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ এসোসিয়েশন লিমিটেড। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিষ্ঠানটির অর্থ লেনদেন শুরু হয়। পরবর্তীতে কয়েক ধাপে নাম পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এটি ঢাকা স্টক সেল নামে বিষয়টি পরিচিত লাভ করেছেন। এটি অবস্থিত মতিঝিলে বাণিজ্য এলাকায়।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ
১৯৯৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ দেশের বাজারে উন্নয়নে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের কমিটির ১৮ জন সদস্য রয়েছে।
শেয়ার কি
টক এক্সচেঞ্জ কি সেটা সম্পর্কে তো আপনারা জেনে গিয়েছেন এবার চলুন জেনে নেই শেয়ারকে। সহজ বাংলায় বলতে গেলে যে কোন কোম্পানি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠানের মালিকানার অংশই হচ্ছে শেয়ার। এটিকে উত্তর প্রতিষ্ঠানের মোট ক্যাপিটালের অংশ বলা যায়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানির মালিকানার অংশ গুলোকে ছোট ছোট ভাগ করা হয়। এই প্রতিটি ছোট ছোট ভাগ্যে এক একটি শেয়ার বলা হয়।
আর কোন কোম্পানির একটি শেয়ারের দাম কত টাকা হবে সেটা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর। প্রতিষ্ঠানটির ধরন, মূলধন, ভ্যালুয়েশন, বাজারে চাহিদা, পন্য বা সেবার চাহিদা ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে এই শেয়ারের দাম। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির স্যারের দাম প্রায় উঠানামা করে। তাইতো অনেকেই চায় কম দামে শেয়ার গুলো কিনে পরবর্তীতে বেশি দামে বিক্রি করার জন্য।
শেয়ার বাজার কি (Share Market)
ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গিয়েছেন স্টক এক্সচেঞ্জ কি এবং শেয়ার কি। আর যেই বাজারে এই শেয়ার কেনাবেচা করা হয় তাকেই বলা হয় শেয়ার বাজার। অনেকেই এটিকে স্টক এক্সচেঞ্জের সাথে মিলিয়ে ফেলতে পারেন। দুইয়ের মধ্যে মিল থাকলেও কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। শেয়ারবাজার সেদিক দিয়ে বৃহৎ। যেভাবে আমরা কাপড়ের মার্কেট হতে কাপড় ক্রয় করি, মাছের বাজার হতে মাছ ক্রয় করি ঠিক তেমনি ভাবে এ সকল বাজারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ারও ক্রয় বিক্রয় করা হয়।
সাধারণ একটি বাজার কিংবা মার্কেট থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয় করতে পারি কিংবা সেবা গ্রহণ করতে পারি। সেটি হতে পারে ফার্নিচার, ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট, কাপড় ইত্যাদি।
কিন্তু শেয়ারবাজারকে একটি অর্থনৈতিক বাজার হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। এর কারণ হচ্ছে এখানে শুধুমাত্র বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, বন্ড, ডিবেঞ্চার কিংবা কোম্পানির মূলধন সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের চুক্তিপত্র ক্রয় এবং বিক্রয় করা হয়ে থাকে।
আমি আপনাদেরকে আরো সহজ করে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে দিচ্ছি। শেয়ার হচ্ছে কোন কোম্পানির বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানার একটি অংশ। আর স্টক এক্সচেঞ্জ হচ্ছে এমন একটি স্থান যেখানে এই অংশগুলি কেনা অথবা বেচাকেনা কাজ চলে। এখন আপনারা নিশ্চয়ই সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন স্টক এক্সচেঞ্জ কি।