লেখাপড়া করছেন কিংবা সদ্য চাকরিতে প্রবেশ করেছেন এমন অনেকেই আছেন যারা কিনা কম বাজেটে পুরাতন ল্যাপটপ কেনার কথা চিন্তা করে থাকেন। কারণ নতুন ডিভাইস গুলোর দাম অনেকটাই বেশি। স্বল্প সময় কিংবা দীর্ঘ সময় ব্যবহারের জন্য এই ধরনের ইউজড বা রিফারবিশড ল্যাপটপ গুলি বেশ ভাল সার্ভিস দিয়ে থাকে।
যেমন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বাজেট এই বর্তমানে কোর আই-সিক্স থেকে এইট বা আরও আপডেপ জেনারেশনের ভালো ভালো ল্যাপটপ পাওয়া যায়। আর যদি ঢাকার বিভিন্ন পুরাতন ল্যাপটপ বিক্রির শোরুম থেকে কেনা যায় তাহলে সাথে থাকে ১ থেকে ২ বছরের ওয়ারেন্টি ও বিভিন্ন ধরনের গিফট। তাই হালকা কাজের জন্য এ ধরনের ল্যাপটপ গুলি খুব বেশি খারাপ নয়।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যে বিষয় গুলি মাথায় রাখতে হবে
দাম কম হলেও অনেক সময় এ সকল ডিভাইসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। এমনকি বিক্রয় পরবর্তী সেবা নাও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে কেনার পর পড়তে হতে পারে নানা ধরনের বিরম্বনায়।
মূলত এ সকল ডিভাইস গুলো কম দামে বিক্রি করা হয় কারণ, যন্ত্রাংশ এবং ফিচার্স গুলি বেশ পুরনো হয়ে যায় বলে। তবে মোটামুটি অফিসের কাজ, ডিজাইনের কাজ, মুভি দেখা, লেখাপড়ার কাজ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়।
বিভিন্ন দোকানদার কিংবা শপ গুলোতে এই ধরনের পুরনো ডিভাইস গুলোকে নতুন করে সার্ভিসিং করা হয়। অর্থাৎ যে যন্ত্র অংশগুলো মোটামুটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেগুলোকে পরিবর্তন করে নতুনের মত করা হয়। এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ ভালো সার্ভিস দেয়। তবে কেনার আগে বেশ কিছু বিষয় বুঝে নেয়া উচিত যেগুলো নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
পুরাতন ল্যাপটপের দাম
আপনার বাজেট যদি মোটামুটি ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে হয় তাহলে পুরাতন ল্যাপটপ কিনতে পারেন। আর যদি এর থেকে বেশি হয়ে থাকে তাহলে নতুন মডেল গুলো দেখতে পারেন।
পুরনো ল্যাপটপ কেনার আগে যে বিষয় গুলি খেয়াল রাখতে হবে
• ডিভাইসের সাথে কতদিনের ওয়ারেন্টি আছে। আর ওয়ারেন্টিতে কি কি সার্ভিস করে প্রদান করবে বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
• ল্যাপটপটি কোন জেনারেশনের সেটা জানা জরুরী। যদি ষষ্ঠ জেনারেশন কিংবা তার কম হয়ে থাকে তাহলে সেটি বেশ পুরনো। এক্ষেত্রে নতুন নতুন অপারেটিং সিস্টেম কিংবা সফটওয়্যার গুলি চলতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।
• ডিভাইসের বাহ্যিক অংশে অর্থাৎ হার্ডওয়ারে বড় কোন ভাঙ্গা কিংবা ইনজুরি আছে কিনা। যাচাই করে নিন।
• ডিভাইসের ডিসপ্লে ঠিক আছে কিনা কিংবা পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা। তবে ল্যাপটপ গুলোর ডিসপ্লে পরিবর্তন করলেও সেগুলো বেশ উন্নত মানের হয়ে থাকে, যদি ভালো ডিসপ্লে লাগানো হয়।
• ডিভাইসের কিবোর্ড, ইউএসবি পোর্ট, ইন্টারনেটের পোর্ট, ও অন্যান্য অংশ গুলো ঠিক ঠাক ভাবে কাজ করে কিনা। পুরানো ল্যাপটপে এই যন্ত্রের অংশ গুলোতে সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। তাই কেনার আগে ভালোভাবে পরীক্ষা করে নি।
• অনেক সময় দেখা যায় ল্যাপটপের ডিসপ্লে পুরাতন হয়ে গেলে ভেতরের ডট বিন্দু কিংবা আলো পড়ে। তাই চালিয়ে দেখে নিবেন এই ধরনের কোন সমস্যা আছে কিনা।
• এরপরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ব্যাটারি ব্যাকআপ। যে কোন ইলেকট্রনিক যন্ত্র যত পুরনো হয় সেটি বিদ্যুৎ অনেক বেশি নিয়ে থাকে। তাই দোকানে বসে চালিয়ে নিন যে কতক্ষণ ব্যাটারি ব্যাকআপ দেয়।
• HDD এর তুলনায় SSD তে পারফরম্যান্স ভালো পাওয়া যায়। তাইতো সবাই এখন এসএসডি বেশি ব্যবহার করে। কেনার আগে এই বিষয়টিও নিশ্চিত করে নিতে পারেন।
যদি আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধব কিংবা আত্মীয়-স্বজন এ ধরনের পুরানো ল্যাপটপ বিক্রি করে থাকে তাহলে তাদের কাছ থেকে কিনতে পারেন। এতে করে অনেকটা নিশ্চিত থাকতে পারবেন। আর যদি বিক্রয় ডট কম কিংবা বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতে কিনে থাকেন তাহলে ওয়ারেন্টি এবং অন্যান্য সুবিধা গুলি পাবেন না। এক্ষেত্রে দক্ষ কাউকে সাথে নিয়ে যান যিনি সকল খুটিনাটি বিষয়গুলি যাচাই করে দেখতে পারবে। আশা করি পুরানো ল্যাপটপ কেনার আগে করনীয় গুলো সম্পর্কে আপনাদের সুস্পষ্ট ধারণা হয়েছে।