ভূমিকম্পের কারণ ও কিভাবে তৈরি হয়

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভূমিকম্প। কারণ এটি কোন ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই ঘটে যায় এবং অল্প সময়ের ভেতরে ভয়াবহ ক্ষতিসাধিত দিতে হয়। আপনি কি জানেন ভূমিকম্প কেন হয়? কিভাবে এটি তৈরি হয় এবং কেনই বা এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা গুলো জেনে নেই।

ভূমিকম্প আসলে কি

কমবেশি এটি সবাই আমরা অনুভব করেছে। কয়েক মুহূর্তের জন্য হঠাৎ করেই মাটির সহ পুরো দুনিয়া যেন কাঁপতে থাকে। সাধারণত মাটির নিচে কোন ধরনের কম্পন থেকে যেই শক্তির সৃষ্টি হয় তাকে আমরা ভূমিকম্প বলে থাকি।

আমাদের জগতে বিস্ময়কর অনেক কিছু রয়েছে। ঠিক তেমনি ভাবে মাটির নিচে গঠন অনেক আশ্চর্যজনক। বিভিন্ন কারণে মাটির নিচে বস্তু গুলো কেঁপে ওঠে এবং তৈরি হয় ভূমিকম্প। সারা পৃথিবীব্যাপী মাঝে মাঝেই এই ধরনের ঘটনা গুলি ঘটে থাকে এবং অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। আবার কোন কোন ভূমিকম্প এত প্রকট থাকে যে আমরা ঘরে বসে এটি টের পাই।

জেনে নিন ভূমিকম্পের কেন্দ্র কাকে বলে

কেন্দ্র বলতে আমরা কোন বিষয়ের মাঝখানের অবস্থাকে পৌঁছায়। মূলত ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলা হয়। অর্থাৎ যেখান থেকে এই কম্পন কিংবা তরঙ্গের তৈরি হয়। সাধারণত এই কেন্দ্রটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৬ কিলোমিটারের মধ্যেই থাকে। এর আরও ৩টি প্রকার রয়েছে চলুন জেনে নেই।

১। গভীর কেন্দ্র: যদি তরঙ্গ কিংবা কম্পন এর উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করে তাহলে তাকে গভীর কেন্দ্র বিশিষ্ট ভূমিকম্প বলা হয়।

২। মাঝারি কেন্দ্র: যদি এটি ভূপৃষ্ঠের থেকে নিচের দিকে ৭০ অথবা ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয় তাহলে তাকে মাঝারি কেন্দ্র বিশিষ্ট ভূমিকম্প বলা হয়।

৩। গভীর কেন্দ্র: আর যদি এটি ৩০০ থেকে ৭০০ অথবা এর চেয়েও গভীর হয় তাহলে তাকে গভীর ভূমিকম্প বলা হয়

ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র কাকে বলে

আমি ভূমিকম্প কেন হয় সেটি আলোচনার পাশাপাশি সকল কঠিন একটি বিষয় গুলো বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করছে। কারণ মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, ডিগ্রী ইত্যাদি পর্যায়ের সহ বিভিন্ন ধরনের চাকরির পরীক্ষায় এর সম্পর্কিত প্রশ্ন এসে থাকে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে সোজা উপরের দিকের স্থান দেখে বলা হয় উপকেন্দ্র। আর এই উপকেন্দ্রে তীব্রতার পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে। উপকেন্দ্র থেকে দূরত্ব বাড়ার পাশাপাশি ভূমিকম্পের তীব্রতা অনেক কম থাকে।

ভূমিকম্প সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য

আমরা জানি এই ভূমিকম্প মাপার যন্ত্রের নাম হচ্ছে রিকটার স্কেল। এ সম্পর্কিত প্রশ্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় এসে থাকে। এই পরিমাপের প্রক্রিয়াটি আবিষ্কার করেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক চার্লস রিকটার। ১৯৩৫ সালে আবিষ্কার করে তার এই পদ্ধতি এবং তার নাম অনুসারেই এককটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

ভূমিকম্প কেন হয় বা ভূমিকম্পের কারণ কি

বিভিন্ন কারণে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগটি হয়ে থাকে। আবার কৃত্রিম বা মানব সৃষ্টির কারণেও এটি ঘটতে পারে। তাই আজকে আমি পুরো কারণটি দুইটি ভাগে ব্যাখ্যা করব।

ভূমিকম্পের প্রাকৃতিক কারণ

১। আমরা জানি পৃথিবীর অত্যাধ ভূপৃষ্ঠের মাটির নিচে অংশ বড় বড় পাত বা শিলা স্তরের সমন্বয়ে গঠিত। এই পাত বা শিলা গুলি বিভিন্ন কারনে ফোন করছি তো হয় কিংবা অন্যান্য কোন কারণে একে অপরের সাথে ধাক্কা খায় তখন ভূমিকম্প তৈরি হয়।

উল্লেখ্য পৃথিবীর অভ্যন্তরে এখনো উত্তপ্ত এবং অনেক গরম। উত্তপ্ত এলাকা গুলোই যখন আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়ে যায় তখন এর আকার কিছুটা সংকুচিত হয়। যার কারণে অনেক জায়গায় ফাঁকা জায়গার তৈরি হয় এবং উপর থেকে পাথরের নিচের দিকে ধ্বসিত হয়। এভাবে ভূমিকম্প কিংবা ভূমি ধ্বসের ঘটনা ঘটে।

২। ভূমিকম্পের কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আগ্নেয়গিরি। অনেক আগেই ঘুরে রয়েছে যেখান থেকে প্রচন্ড গতিতে বাইরে বের হয়ে আসে। তখন আশেপাশে এলাকা গুলোতে ভূমিকম্প অনুভূত হতে পারে।

৩। মাটির নিচে অনেক জায়গায় বাষ্পকুঞ্জ সঞ্চিত থাকে।। এর পরিমাণ যখন অনেক বেশি হয়ে যায় তখন সেটি অনেক জোরে শিলাস্তরে ধাক্কা দেয় এবং আশেপাশের ভূমিকম্পের কারণ হয়ে দাঁড়ায়

৪। ভূমিকম্প কেন হয় সেটি আরো একটি কারণ হচ্ছে পাহাড় কিংবা পর্বত। নানা কারণে একটি পাহাড় কিংবা পর্বতের কোন অংশ যদি মাটিতে ধ্বসে পড়ে তার কারণে আশেপাশের এলাকা জুড়ে প্রচণ্ড কম্পনের সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি হিমালয় পর্বতের অনেক বড় প্রচন্ড গতিতে নিচে নেমে আসার কারনেও এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়।

ভূমিকম্প কেন হয় তার কৃত্রিম কারণ

১। মানুষ নানা ধরনের গবেষণা ইত্যাদি কাজে মাটির নিচে বড় বিস্ফোরণ ঘটে থাকে যার কারণে আশেপাশে এলাকাগুলোতে মানব সৃষ্ট ভূমিকম্প তৈরি হতে পারে

২। মানুষ নদীতে বাদ দিয়ে কৃত্রিম জলাধার নির্বাচন করেন নির্ধারণ করে কিংবা নানা বড় বড় স্থাপনা তৈরি করতে গিয়ে মাটির উপরে বড় চার তৈরি করে। এখান থেকেও তৈরি হতে পারে ভূমিকম্প।

তবে ভূমিকম্পের কারণ কিংবা ভূমিকম্প কেন হয় সেটি যাই হোক না কেন এর কারনে মানব জীবনের বিশাল দুর্যোগ নেমে আর নাই। আপনারা নিশ্চয়ই বিভিন্ন খবরের কাগজ দেখেছেন এর মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিশাল এলাকা। আমাদেরকে প্রকৃতির রক্ষার্থে বেশি বেশি গাছ লাগানো উচিত এবং পরিবেশের প্রতি আরো যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।

Leave a Comment